প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। শিক্ষকদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন, বইয়ের বোঝা কমানো, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের কিন্ডারগার্টেন বিমুখ করা, মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করাসহ নানা বিষয়ে তিনি গতকাল মঙ্গলবার বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন।
সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বসে গতকাল ঢাকা জেলার চারটি উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা এবং শিক্ষকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলাপ করেন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। তিনি শিক্ষকদের সঠিক সময়ে স্কুলে যেতে ও নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা হালাল রুজি করতে চাই, হালাল খেতে চাই। আমাদের দায়িত্বগুলো যাতে আমরা অন্তত পালন করি। আমরা সঠিক সময়ে স্কুলে যেতে চাই, ঠিক সময়ে স্কুল থেকে আসতে চাই। আমাদের ছেলে-মেয়েদের ভালো শিক্ষা দিতে চাই। যাতে তারা নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।’
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তানরা যাতে কিন্ডারগার্টেনে না পড়ে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা না, আমি আপনাদের ভোটে নির্বাচিত লোক, সরাসরি আমার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলবেন। যেকোনো সমস্যা নিয়ে, আমার বিরুদ্ধে হলেও আমাকে বলবেন। ভবিষ্যতে যেন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থীরা আপনার স্কুলে যেতে চায়, আপনার স্কুলের বাচ্চারা যেন কিন্ডারগার্টেনে না যায়। কেজি স্কুলের মাস্টাররা তো বেতনও পান না, আপনারা যতটা পান। তাই আপনারা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করবেন। আর যে স্কুল এটা করতে পারবে, আমি তাদের পুরস্কৃত করব।’
শিক্ষার্থীদের বইয়ের বোঝা কমানোর কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একটা বাচ্চার পক্ষে এত বই নিতে কষ্ট হয়। আমরা চাচ্ছি, মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করলে বইয়ের ভার কমবে।’
তিনি বলেন, ‘কোনো শিক্ষা কর্মকর্তা যদি শিক্ষকদের হয়রানি করেন, আমি তাঁদের মার্সি করব না। আমি দেখেছি এক শিক্ষককে এখানে বদলি করেন, ওখানে বদলি করেন। এর ভেতর দিয়ে টাকা-পয়সাও নেওয়া হয়। আবার শিক্ষকদের ভেতরেও কিছু আছে টিও সাহেবের সঙ্গে মিলে আরেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন। আর শিক্ষকদের বেতন বৈষম্যের ব্যাপারে আলোচনা করে সমাধান করব।’ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার ব্যাপারটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সহসাই ঠিক করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষকদের সন্তানরা যাতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় সে ব্যাপারে সার্কুলার জারির চিন্তা-ভাবনা চলছে।’