ববি খুললেও ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি - Dainikshiksha

ববি খুললেও ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি

সাইফুর রহমান মিরণ, বরিশাল |

উপাচার্যের পদত্যাগ কিংবা ছুটিতে যাওয়ার প্রমাণ ছাড়া ক্লাশ-পরীক্ষায় অংশ নেবে না বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এমন ঘোষণার কারণে কাগজে-কলমে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ ১১ দিনের অচলাবস্থার পর বিভাগীয় প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় সমঝোতার ভিত্তিতে রোববার (৭ এপ্রিল) থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর কথা ছিল।

শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক নোটিশে রোববার থেকে সকল আবাসিক হল ও ডাইনিং চালু করার পাশাপাশি ক্যাম্পাসের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু সেই ঘোষণা নোটিশেই সীমাবদ্ধ থাকে। ১২তম দিনেও শিক্ষার্থীরা সকল প্রশাসনিক এবং একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে থেমে থেমে বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদী গান পরিবেশন করে। কাগজে-কলমে ক্যাম্পাস খুললেও বিভিন্ন গেটে তালা ঝুলানো থাকায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অফিসে প্রবেশ করতে পারেননি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর তারা বাড়ি ফিরে যান।

এর আগে, আন্দোলনের ১১তম দিনে গত শনিবার বরিশাল সার্কিট হাউসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ৪ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন সদর আসনের এমপি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, সিটি মেয়র সেরনিয়াবত সাদিক আবদুল্লাহসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল।

বৈঠক শেষে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হককে আর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন না করতে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মাধ্যমে উপাচার্যকে ছুটি দিয়ে কিংবা পদত্যাগ করিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু ওই দিন সন্ধ্যায় বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ কিংবা তাকে ছুটিতে পাঠানোর প্রমাণ পত্র হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
 
ঘোষণা অনুযায়ী রোববার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে সকল প্রশাসনিক এবং একাডেমিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে। তারা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শ্লোগান দেয়। ফাঁকে ফাঁকে সঙ্গীত পরিবেশন করে। পড়ালেখায় ক্ষতি হলেও উপাচার্যের পতদ্যাগ কিংবা ছুটির লিখিত প্রমাণপত্র হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতা রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শফিকুল ইসলাম।
 
আন্দোলনের ফলে সেশন জটের আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্ধারিত সময়ে কেউ তাদের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি। এমনিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন জট আছে। এ অবস্থায় আন্দোলনের কারণে ১০-১৫ দিন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকলে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না বলে দাবি করেন শিক্ষার্থীদের নেতা শফিকুল ইসলাম। 

এদিকে, ক্যাম্পাস খোলার নোটিশ জারী করায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রোববার অফিসে প্রবেশ করতে চাইলে তাদের বাধা দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ফটকগুলোতে তালা ঝুলানো থাকায় তারা অফিসে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে যান। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান হেনা রানী বিশ্বাস বলেন, শনিবার রাতে রেজিস্ট্রারের নোটিশ পেয়ে রোববার ক্যাম্পাসে যান। কিন্তু একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনগুলোর ফটকে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান নেয়ায় কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি। শিক্ষার্থী ছাড়া শিক্ষকরা ক্লাশ করতে পারবেন না জানিয়ে শুধুমাত্র কার্যালয়ে বসার সুযোগ চেয়েছিলেন তিনিসহ অন্যান্য শিক্ষকরা। কিন্তু শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের কোনো কথাই শুনছেন না। কার্যালয়ে ঢুকতে না পেরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার তারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।

এদিকে, ঘোষণা থাকলেও রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা এবং প্রশাসনিক কোনো কার্যক্রমই শুরু হয়নি বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সুব্রত কুমার দাস। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ কিংবা ছুটিতে যাওয়ার প্রমাণ পত্র ছাড়া ক্লাশ-পরীক্ষায় অংশ নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম ইমামুল হক মুঠোফোনে বলেন, কারোর চাপের মুখে পদত্যাগ কিংবা ছুটিতে যাবেন না তিনি। কোনো অন্যায় আবদারের কাছে মাথা নত করবেন না। তিনি বলেন, তাকে ৪ বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন চ্যান্সেলর। চ্যান্সেলর যদি মনে করেন তার পদত্যাগ কিংবা ছুটিতে যাওয়া প্রয়োজন তাহলে তিনি সেই আদেশ মানতে বাধ্য। তিনি উপাচর্য থাকলে যাদের স্বার্থহানী হওয়ার আশঙ্কা আছে তারাই এই আন্দোলনে পেছন থেকে ইন্ধন দিচ্ছেন বলে পাল্টা অভিযোগ করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক।
 
গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদ করলে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে কটূক্তি করেন। এমন অভিযোগে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061471462249756