দৈনিক শিক্ষার খবরে বরখাস্ত হচ্ছেন শিক্ষা ক্যাডারের সেই অধ্যক্ষ - দৈনিকশিক্ষা

দৈনিক শিক্ষার খবরে বরখাস্ত হচ্ছেন শিক্ষা ক্যাডারের সেই অধ্যক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকেও দীর্ঘ সাত বছর এমপিও ভোগ! কলেজ সরকারি হলে মার্কিন মুলুকে থেকেই আত্তীকরণ! শুনতে অসম্ভব লাগলেও এর সবই সম্ভব হয়েছে ব্যবস্থাপনার শিক্ষক আইবুর রহমানের বেলায়। আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে ঘুষ খেয়ে পেছন থেকে সাহায্য করেছেন রাজবাড়ীর পাংশা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রতিযোগীতামূলক বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী। এমপিও তুলতে শিক্ষক আইবুরের স্বাক্ষর করা চেক নিজের কাছে রেখেছেন অধ্যক্ষ আতাউল। কিন্তু দৈনিক শিক্ষা ডটকমের অনুসন্ধানে ধরা পড়েছেন শিক্ষক আইবুর-আতাউল দুইজনই। চেকের ফটোকপি দৈনিক শিক্ষার কাছেও রয়েছে। 

গত অক্টোবরে দৈনিক শিক্ষাডটকমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে শিক্ষা প্রশাসন। হয় তদন্ত। প্রমাণ মেলে অভিযোগের। গত এপ্রিলে বিদেশে থেকে এমপিও ভোগে সরকারের যে পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে সে পরিমাণ টাকা আইবুরকে ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সাথে অধ্যক্ষ আতাউলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়। আইবুরের দীর্ঘ অনুপস্থিতিকে বৈধতা দেওয়ায় কলেজটির পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে উপাধ্যক্ষ এ কে এম শফিকুল মোরশেদকে। এবার শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা অধ্যক্ষ মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরীকে বরখাস্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাকে 'কেন চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবেনা' তা জানতে চেয়ে শোকজ করা হয়েছে। গত সোমবার (২২ জুলাই) শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরীকে শোকজ নোটিশ পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।  তবে, শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় কর্মরত আতাউলের জাতভাইদের (শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা) বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা হচ্ছে না। আতাউলকে প্রায়ই দেখা যায় অধিদপ্তরের সরকারি কলেজ শাখায় ঘুরঘুর করতে। 

আরও পড়ুন: 

ঘুষ খেয়ে আত্তীকরণ, শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ

আমেরিকায় থেকেও সরকারিকরণ, নিয়মিত এমপিও!

গত ৬ অক্টোবর 'আমেরিকায় থেকেও সরকারিকরণ, নিয়মিত এমপিও!' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয় দৈনিক শিক্ষা ডটকমে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটিতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, ডিভি লটারি জিতে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে আমেরিকায় পাড়ি জমান পাংশা কলেজের সহকারী অধ্যাপক আইবুর রহমান। বিদেশে অবস্থান করেই ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ৫ বছরের বেশি সময় এমপিও ভোগ করেছেন তিনি। কলেজটি সরকারি হলে অ্যাডহক নিয়োগের বিষয়েও ছাড় দেননি আইবুর। অধ্যক্ষ আতাউল হক খান চৌধুরীকে ডলারে ঘূষ খাইয়ে অ্যাডহক নিয়োগ পান তিনি।

 দৈনিকশিক্ষায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। গত জানুয়ারিতে তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় শিক্ষা অধিদপ্তর। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সহকারী অধ্যাপক আইবুর ও অধ্যক্ষ আতাউল হক চৌধুরী বিরুদ্ধে শুরু হয় বিভাগীয় ব্যবস্থার প্রক্রিয়া। গত এপ্রিলে সরকারের আর্থিক ক্ষতির সমপরিমাণের টাকা ফেরতের নির্দেশ দেয়া হয় কলেজটির উপাধ্যক্ষ ও শিক্ষক আইবুরকে।

গত বছরের ৩ অক্টোবর অধ্যক্ষ আতাউল হক খান চৌধুরীর সাথে কথা হয়েছিল দৈনিকশিক্ষা ডটকমের পক্ষ থেকে। তখন তিনি দাবি করেন, 'আইবুর ২০১১ থেকে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর অর্থাৎ পাংশা কলেজ সরকারিকরণের প্রজ্ঞাপন জারি পর্যন্ত শিক্ষাছুটিতে ছিলেন। বেসরকারি আমলের গভর্নিং বডি তাকে শিক্ষাছুটি দিয়েছে। এরপর কলেজটি সরকারিকরণ হলে তিনি একবার দেশে ফেরেন এবং কলেজ অধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকা অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে আরও তিন বছর তার কোর্স শেষ করার জন্য ছুটি বাড়িয়ে নেন।'

২০১১ খিষ্টাব্দ থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইবুরের এমপিও বহাল থাকলেও প্রথমে অধ্যক্ষ আতাউল হক তা দৈনিক শিক্ষার কাছে অস্বীকার করেন। পরে প্রমাণ উল্লেখ করে ছোড়া এক প্রশ্নের জবাবে আতাউল বলেন, ‘এমপিও চালু থাকা অবৈধ নয়।’ তবে, বিধি বিধানে অধ্যক্ষের এ দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

২০১১ খিষ্টাব্দ থেকে ২০১৮ খিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষক আইবুরের এমপিও চালু থাকার ব্যাপারে অধ্যক্ষ আতাউল বলেছিলেন, “বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।”

চাকরি জীবনের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরে (ডিআইএ)। যেটাকে ঘুষ দুর্নীতির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা শিক্ষকরা অভিহিত করেছেন। 

ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065908432006836