বিট, হৃদয়ের বন্ধু বলা যায় যাকে। আমাদের দেশে এই সবজি খুব একটা পরিচিত বা পছন্দের তালিকায় নেই। তবে প্রাচীনকাল থেকেই বিটের বিশেষ কদর রয়েছে। নিয়মিত বিট খেলে শরীরের নানা উপকার হয়। এর রস রক্তে লাল কণিকার সংখ্যা বাড়ায়। স্ট্যামিনা বাড়াতেও সাহায্য করে এটি। মানব শরীরে রক্ত চলাচল ঠিক রেখে ব্লাডপ্রেশার কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে। শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতেও সক্ষম। রক্ত থেকে টক্সিক উপাদান বের করার মাধ্যমে লিভার ঠিক রাখতেও সাহায্য করে বিট।
ভিটামিন, জিঙ্ক, আয়োডিন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ক্লোরিন, সোডিয়ামসহ নানা পরিপোষক পদার্থে ভরপুর বিট। ক্লোরিনের হাইপো অ্যালার্জেনিক ধর্ম গলব্লাডার, কিডনি ও লসিকা পরিষ্কার করে। গুণাগুণ সম্পর্কে না জানার কারণেই হয়তো সবার কাছে বিটের কদর নেই। উপেক্ষার সবজি হয়ে রয়েছে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, দিনে অন্তত দুই গ্লাস বিটের জুস খান। বিটে থাকা উচ্চমাত্রার নাইট্রেট রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে।
লিভার ডিটক্সিফাই করে
ফাস্টফুড, স্পাইসিতে অভ্যস্ত জীবনে এমনিতেই লিভারের অবস্থা শোচনীয়। বিটের জুসে থাকা বেটাইন নামে এক উপাদান কিন্তু লিভার ফাংশন ভালো করে। লিভার থেকে টক্সিন বের করে দেয়।
ক্যান্সারের চিকিৎসায়
বিটের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-টিউমার গুণ। গবেষণায় দেখা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত কোষের হাত থেকে সুস্থ কোষগুলোকে বাঁচায়। নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে।
পিরিয়ডের সমস্যা
সময়ের আগেই মেনোপজের লক্ষণ দেখা দিলে বা ঋতুচক্র সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হলে বিটের জুস খান। বিটে থাকা আয়রন নতুন লোহিত রক্তকণিকা গঠনে সাহায্য করে, যার ফলে ঋতুচক্রের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, তাদের উচিত বেশি করে বিটের জুস খাওয়া। বিপাকের সমস্যা দূর করে হজমশক্তি বাড়ায়। পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হয়।
রক্তস্বল্পতা ও আয়রন সমস্যা
বিটে প্রচুর আয়রন থাকে, যা লোহিত রক্ত কণিকার জন্য অত্যন্ত জরুরি উপাদান। যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন বা যাদের আয়রনের ঘাটতি রয়েছে, তাদের বেশি করে বিট খাওয়া উচিত।
ডিপ্রেশন দূর করে
কোনো কারণে ডিপ্রেশনে ভুগছেন বা বিষণ্ণতা আপনাকে গ্রাস করছে? বিট জুসই হতে পারে সেরা প্রাকৃতিক ওষুধ। বিটে ট্রিপ্টোফান ও বিটেইন নামে যে উপাদান থাকে, তা ডিপ্রেশন কাটাতে ভালো কাজ দেয়।
জন্মগত ত্রুটি দূর করে
বিট রুটের মধ্যে রয়েছে ফোলেট ও ফলিক এসিড। যার কাজ হলো জন্মগত ত্রুটি দূর করা। যে কারণে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ডাক্তাররা বিট জুস খাওয়ার পরামর্শ দেন।
ত্বকের জন্য ভালো
বিটের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-এজিং ফর্মুলা। যার ফলে ত্বক থেকে বার্ধক্যের ছাপ দূর করতে নিয়ম করে বিট জুস খান। ত্বকের অন্যান্য সমস্যাও দূর করে।
রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক করে
বিটে রয়েছে অতিমাত্রায় নাইট্রেটস। মুখে থাকা ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে এসে এই নাইট্রেট মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে।
সূত্র: দৈনিক সমকাল