যশোর বোর্ডে ফাঁস হয় বার্ষিক অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নও! - দৈনিকশিক্ষা

যশোর বোর্ডে ফাঁস হয় বার্ষিক অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নও!

আকতারুজ্জামান |

যশোর শিক্ষা বোর্ডে ফাঁস হয় বার্ষিক, অর্ধবার্ষিক, এমনকি প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার প্রশ্নও। প্রতিটি পরীক্ষার দিন প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের হাতে হাতে পৌঁছে যায় প্রশ্নের কপি। শিক্ষা বোর্ডের অধীন সব জেলায় একই প্রশ্ন হওয়ার কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহজে তা ছড়িয়ে পড়ছে এক জেলা থেকে অন্য জেলায়। আর এ প্রশ্ন দেখেই ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নিচ্ছে পরীক্ষায়। প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দেওয়ায় দিন দিন পড়াশোনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে তারা। এতে একদিকে যেমন শিক্ষার্থীরা দিন দিন মেধাহীন হয়ে পড়ছে, তেমনি সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা।

কিন্তু এমন ঘটনা ঘটলেও শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ যেন নির্বিকার। তারা বলছেন, ‘এর দায় প্রধান শিক্ষকের। আমরা প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রশ্ন দিই। যারা শিক্ষা দেবেন তারা অসৎ হলে কিছুই করার থাকে না।’ সূত্রমতে, একটি কেন্দ্রীয় প্রশ্নব্যাংকের মাধ্যমে প্রশ্ন প্রণয়ন করে যশোর শিক্ষা বোর্ড। বোর্ডের অধীনে সব স্কুলের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক, অর্ধবার্ষিক ও প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় প্রশ্নের মাধ্যমেই। পরীক্ষার দিন প্রায় তিন ঘণ্টা আগে শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে নির্ধারিত প্রশ্ন আপলোড করে দেওয়া হয় বোর্ডের। শিক্ষা বোর্ড থেকে পাঠানো একটি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা ওয়েবসাইটের প্রশ্নব্যাংক প্যানেলে গিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ইআইআইএন নম্বর দিয়ে প্রশ্নপত্র ডাউনলোড করেন। পরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফটোকপি বা প্রিন্ট করে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। কিন্তু এর মধ্যেই কিছু প্রধান শিক্ষক নিজেদের বা কাছের ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন দিয়ে দিচ্ছেন, যা ছড়িয়ে পড়ছে মুহূর্তেই। শিক্ষকের মাধ্যমে প্রশ্ন পাওয়ার কারণে প্রাইভেট, টিউশনিতে আগ্রহ বাড়ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। তথ্যমতে, ১ জুলাই থেকে যশোর শিক্ষা বোর্ডে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির অর্ধবার্ষিক এবং দশম শ্রেণির প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু  হয়েছে। বোর্ডের অধীনে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ২৭ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

প্রশ্নব্যাংকের মাধ্যমে প্রাপ্ত প্রশ্ন দিয়েই নেওয়া হচ্ছে এসব পরীক্ষা। আর অধিকাংশ দিনই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে চলে আসছে প্রশ্নের কপি। গতকাল এ বোর্ডে দশম শ্রেণিতে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা (সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত) নির্ধারিত ছিল। কিন্তু সকাল ৮টা থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এ পরীক্ষার প্রশ্ন। প্রশ্নের একটি কপি আসে এ প্রতিবেদকের কাছেও, পরীক্ষার পর মূল প্রশ্নের সঙ্গে যার হুবহু মিল পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা বোর্ডের অধীন একটি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক স্কুলের অভ্যন্তরীণ প্রশ্ন ফাঁস হওয়া নিয়ে এ প্রতিবেদকের কাছে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘অনেক ছাত্র সকালে প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। কোনোভাবেই এ প্রশ্ন ছড়িয়ে যাওয়া বন্ধ করা যাচ্ছে না। দিন দিন ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।’

পরীক্ষার প্রশ্ন ছড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল আলীমের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য না করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র  বলেন, শুধু প্রধান শিক্ষকের মোবাইলেই প্রশ্ন ডাউনলোডের ওয়ানটাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) পাঠানো হয়। তাই কোনো ছাত্র বা ছাত্রী পরীক্ষার আগে প্রশ্ন পেয়ে থাকলে এর দায় কোনো অসৎ প্রধান শিক্ষকের। অভিযোগ পেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, ‘আমরা একটি সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে পরীক্ষামূলকভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। এ জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’

 

সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন

রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী - dainik shiksha গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036380290985107