৫ মাস বয়স বাড়িয়ে একটি সরকারিকৃত স্কুলে অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে স্কুলটির সভাপতির পূত্রবধুকে। নীলফামারীর জলঢাকার কৈমারী ইউনিয়নের সরকারিকৃত চেংমারী ডাঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটি সরকারি হওয়ার আগে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে চাকরিবিধি থেকে প্রায় ৫ মাস কম বয়সী শিল্পী আক্তারকে শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শিল্পী আক্তার প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন সভাপতি পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু ছালেকের পুত্রবধু। সম্প্রতি সরকারিকৃত স্কুলের শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণের কাগজপত্র যাচাইয়ে বিষয়টি নজরে এসেছে।
‘৫ মাস বয়স বাড়িয়ে সভাপতির পুত্রবধুকে সরকারিকৃত স্কুলে নিয়োগ’ শিরোনামে দৈনিক শিক্ষাডটকমে সংবাদ প্রকাশের পর ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন সরকার। তদন্ত টিম রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে জলঢাকা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে এসে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
অভিযুক্ত কৈমারী ইউনিয়নের সরকারিকৃত চেংমারী ডাঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শিল্পী আক্তারের উপস্থিতিতে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন : ৫ মাস বয়স বাড়িয়ে সভাপতির পুত্রবধুকে সরকারিকৃত স্কুলে নিয়োগ
তদন্ত শেষে জানতে চাইলে তদন্ত টিমের প্রধান সমন্বয়ক জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রেজওয়ানুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বয়স বাড়িয়ে সভাপতির পুত্রবধুকে স্কুলে নিয়োগের সত্যতা পেয়েছি। সভাপতি আবু ছালেক বয়স কম থাকা অবস্থায় তার পুত্রবধুকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে কমিটির কোন রেজুলেশন ছাড়াই তার পুত্রবধু শিল্পী আক্তারকে পূর্ণ নিয়োগ দিয়েছেন। শিক্ষক নিয়োগে এমন অনিয়মে বিধি অনুসরণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্য হলেন, ডিমলা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার রায় ও নীলফামারী সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আতাউল গণি ওসমানী। সম্প্রতি সরকারিকৃত স্কুলের শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণের কাগজপত্র যাচাইয়ে নীলফামারী জলঢাকার কৈমারী ইউনিয়নের চেংমারী ডাঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাকরি বিধি অনুয়ায়ি ৫ মাস কম বয়সে চাকরি হওয়ার অভিযোগ উঠে। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জানা যায়,ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা শিল্পী আক্তার ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের রাজারহাট কাবাদিয়া আলিম মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করেন। সনদ অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ এপ্রিল। তাকে ওই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২২ নভেম্বর। তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর ৭ মাস ৯ দিন। ১৮ বছর পূর্ণ থেকে বাকি ছিল ৪ মাস ২১ দিন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে সভাপতির ছেলের বউয়ের চাকরি বাঁচানোর জন্য অতিগোপনে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভা না করে এবং পুনরায় কোন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই কাগজে কলমে শিল্পী আক্তারকে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ মে তারিখে নিয়োগ দেন। গত ১৯ জানয়ারি এ নিয়ে দেশের শিক্ষা বিষয়ক একমাত্র ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকমে সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।