লোকজ গানের মরমি শিল্পী আব্বাসউদ্দীন আহমদের ৬০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ সোমবার। ১৯৫৯ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন এই গুণী শিল্পী। আব্বাসউদ্দীন আহমদ ১৯০১ সালের ২৭ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জের বলরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম জাফর আলী আহমদ এবং মায়ের নাম বেগম লুৎফন নেসা।
আব্বাসউদ্দীন যখন গান শুরু করেন, তখন ছিল বাংলার মুসলমান সমাজের নবজাগরণের কাল। গানের জগতে আব্বাসউদ্দীনের কোনো ওস্তাদের তালিম ছিল না। আপন প্রতিভাবলে নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরেন তিনি। প্রতিভাবান এই শিল্পী প্রথমে ছিলেন গ্রামের একজন গায়ক। যাত্রা, থিয়েটার ও স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান শুনে তিনি এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এবং নিজ চেষ্টায় গান গাওয়া শুরু করেন। এরপর কিছু সময়ের জন্য তিনি ওস্তাদ জমিরউদ্দীন খাঁর কাছে উচ্চাঙ্গসংগীত শিখেছিলেন। রংপুর ও কোচবিহার অঞ্চলের ভাওয়াইয়া, ক্ষীরোল চটকা গেয়ে আব্বাসউদ্দীন প্রথমে সুনাম অর্জন করেন। তারপর জারি, সারি, ভাটিয়ালি, মুর্শেদি, বিচ্ছেদি, মর্সিয়া, পালাগান ইত্যাদি গেয়ে জনপ্রিয় হন। তিনি দরদভরা সুরেলা কণ্ঠে পল্লীগানের সুর যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন, তা আজও তুলনাহীন।
একজন বাঙালি লোকসংগীতশিল্পী, সংগীত পরিচালক ও সুরকার হিসেবে তার ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে। সংগীতে অবদানের জন্য তিনি মরণোত্তর প্রাইড অব পারফরম্যান্স, শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।