মসজিদ মিশন সংস্থা ও তাদের পরিচালিত মসজিদ মিশন একাডেমিকে ‘জামায়াতমুক্ত’ করার দাবিতে এবার মাঠে নামলেন রাজশাহীর মুক্তিযোদ্ধারা। শনিবার (২২ আগস্ট) বিকালে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে তারা মসজিদ মিশন থেকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে অপসারণ করার দাবি জানান।
নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রাজশাহী নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার বড়কুঠি এলাকায় মসজিদ মিশন একাডেমিতেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী চক্রান্ত হয়। এমন পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধারা রাস্তায় না নেমে থাকতে পারলেন না। কারণ, তারা মনে করেন স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে সব সময় প্রতিহত করা প্রয়োজন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে তারা আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার। তাই মসজিদ মিশন একাডেমিকে জামায়াত-শিবিরের খপ্পর থেকে বের করতে হবে। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাদের এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাস্তায় থাকবেন।
বক্তারা বলেন, মসজিদ মিশন একাডেমি জামায়াত নেতাদের নির্ধারণ করে দেয়া বই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়ায়। এর মাধ্যমে তাদের সাম্প্রদায়িক করে গড়ে তোলে। এই মসজিদ মিশন একাডেমি ১১ কোটি টাকা লুটপাট করে সেই টাকায় রাজশাহীতে সহিংসতা করেছে। রাজশাহীকে অস্থিতিশীল করেছে। তাই তারা প্রতিষ্ঠানটির সকল শিক্ষক-কর্মচারীকে অব্যহতি দেয়ার দাবি জানান।
তারা বলেন, যতদিন পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে ততদিন তারা রাস্তায় থাকবেন। মসজিদ মিশন একাডেমিকে জামায়াতমুক্ত করা হবে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে মসজিদ মিশন একাডেমির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের দাবি জানান। এই মানববন্ধন থেকে আগামী ২৫ আগস্ট বিকালে একই দাবিতে একই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের রাজশাহী জেলা ও মহানগর ইউনিটের ব্যানারে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ডা. আবদুল মান্নান। পরিচালনা করেন, রাজশাহী থিয়েটারের সাবেক সভাপতি কামার উল্লাহ সরকার কামাল।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান রাজা, মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম, মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি আরিফুল হক কুমার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির জেলার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বরজাহান, সম্মিলিত সাংষ্কৃতিক জোটের নগরের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ কুমার ঘোষ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাললাম আজাদ, জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অঞ্জনা সরকার, সাবেক ছাত্রনেতা মীর ইসতিয়াক আহম্মেদ লিমন প্রমুখ।
মানববন্ধনে উদীচি শিল্পীগোষ্ঠি, রাজশাহী থিয়েটার, আবৃত্তি পরিষদ, শহীদ জামিল আকতার রতন স্মৃতি সংসদসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংষ্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠনের সদস্যরা একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নেন।