বরগুনার বহুল আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জেলা কারাগারের কনডেম সেল থেকে বাবা-মাায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এ সময় কান্নাকাটি করেন মিন্নি।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কারাগারের টেলিফোন থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন মিন্নি।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর জানান, ‘সকাল ১০টার দিকে মিন্নি আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে। সে খুব কান্নাকাটি করেছে।'
মোজাম্মেল হোসেন আরও বলেন, ‘মিন্নি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। জেলখানায় সে ভালো নেই। ষড়যন্ত্র করে আমার মেয়েকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।’
বরগুনা জেলা কারাগারের কনডেম সেলের একমাত্র নারী আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া অন্য পুরুষ আসামিদের পুরুষ ওয়ার্ডের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কারাবিধি অনুযায়ী ছয় বন্দিকে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। কারাগার থেকে প্রত্যেককে দুই সেট করে পোশাক দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কনডেম সেলের বন্দিরা সেল থেকে বের হতে পারেন না। তবে মাসে একবার স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। সপ্তাহে একবার তারা ফোনে স্বজনদের সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কথা বলতে পারেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিন্নিকে আজ সকালে রুটি খেতে দেওয়া হয়েছে। দুপুরের খাবার ছিল ভাত, সবজি ও ডাল। রাতে গরুর মাংস, ভাত ও ডাল দেওয়া হবে।’
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরের দিন রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর নিহত রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দু’ভাগে বিভক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন আসামি।
প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের বিচারিক কার্যক্রম শুরুর জন্য ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত চার্জ গঠন করেন। গত ৮ জানুয়ারি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলার ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর উভয় পক্ষের যুক্তি-তর্ক শেষ হয়। বুধবার মিন্নিসহ ৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।