স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু বলেছেন, মাদ্রাসায় কর্মরত শিক্ষকদের একাধিক সংগঠন আছে, সেগুলোর বেশ কয়েকটি স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির পক্ষে কাজ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি হিসেবে কাজ করার জন্যই স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের (স্বাশিপ) জন্ম হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের মাদ্রাসা শিক্ষকদের নিয়ে মাদ্রাসা ইউনিটের আত্মপ্রকাশ ঘটাতে যাচ্ছে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ। দীর্ঘ কয়েকবছর তারা স্বাশিপের সঙ্গেই কাজ করেছে।
শাহজাহান আলম শুক্রবার বিকেলে দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, মাদ্রাসা ইউনিট জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে কাজ করবে। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ পুরোপুরি দমন করা সম্ভব নয়। তিনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এছাড়া সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরু আগে পাঁচ মিনিট করে শিক্ষার্থীদের জঙ্গিবাদের কুফল সম্পর্কে সচেতন করতে শিক্ষকদের অনুরোধ করেন সারাদেশে ‘কল্যাণ সাজু’ নামে পরিচিতি পাওয়া এই শিক্ষক নেতা্।
তিনি জানান, মাদ্রাসা ইউনিট আত্মপ্রকাশ উপলক্ষ্যে কাল শনিবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করবে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ।
মাওলানা মো. আবু নাঈম মোস্তাফিজুর রহমাকে আহ্বায়ক ও মাওলানা মো. কাজী জহিরুল ইসলামকে সদস্য-সচিব করা হচ্ছে।
ইউনিট গঠনের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে শাহজাহান আলম বলেন, দুখের বিষয় হলো মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে হাতেগোণা দুএকজন বাদে বাদবাকী সবাই এখনও হয় বিতর্কিত না হয় জামাতপন্থী। একটি বিতর্কিত মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠনের নেতা যিনি যুদ্ধাপরাধীর ছেলে এবং তার অঙ্গুলী হেলনে মাদ্রাসা বোর্ড পরিচালিত হয় এখনও। শিবিরপন্থী শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যরা দশ/এগারো বছর যাবত চাকরি করছে সনদ ও গোপণীয় শাখায়। সুযোগ পেলেই এরা আবার জামাতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যাবস্থাকে এদের হাত থেকে উদ্ধার করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী মাদ্রাসা শিক্ষকদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের মূলৎপাটনে স্বাশিপের মাদ্রাসা ইউনিট অগ্রনী ভূমিকা পালন করবে।
ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তির আওতায় আনা, দাখিল ও আলিমের কারিকুলাম আধুনিকায়ণসহ মাদ্রাসাক্ষেত্রে সরকারের ব্যাপক সাফল্য প্রচার করছে না মাদ্রাসাবোর্ড ও সুবিধাবাদী কয়েকটি মাদ্রাসা শিক্ষকদের সংগঠন। স্বাশিপ মাদ্রাসা ইউনিট এ কাজগুলো করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।স্বৈরশাসক এরশাদ শাহীর জমানায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন করার সময় বারবার কারাগারে যাওয়া শাহজাহান আলম সাজু গত বিএনপি-জাময়াত জোট সরকারের সময় চাকরিচ্যুত হয়েছেন। নিজের প্রতিষ্ঠিত কলেজ থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করে ২২ টি মামলা দেয়া হয় তার বিরুদ্ধে।শিক্ষকদের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে রাজপথে অসংখ্যাবার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সাজু।
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের তিনবারের সদস্য-সচিব শাহজাহান আলম সাজু কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।