মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিজয়ের মাসেও হচ্ছে না নিয়োগের প্রজ্ঞাপন - দৈনিকশিক্ষা

৩৯তম বিশেষ বিসিএসমুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিজয়ের মাসেও হচ্ছে না নিয়োগের প্রজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সুপারিশ পেয়েও ৩৯তম বিশেষ বিসিএসে (স্বাস্থ্য) মুক্তিযোদ্ধা কোটার ১২৪ প্রার্থী চাকরিতে যোগ দিতে পারছেন না। তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই শেষে এ সংক্রান্ত উপকমিটি প্রতিবেদন দিলেও তা আমলে নেয়নি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত জামুকার বৈঠকে নতুন করে সিদ্ধান্ত হয়েছে জামুকার চেয়ারম্যান ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের তথ্য-উপাত্ত ৬ ও ৮ জানুয়ারি আবারও যাচাই-বাছাই (শুনানি) হবে। তারপরই হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। ফলে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরেও হচ্ছে না নিয়োগের প্রজ্ঞাপন। জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে ওই চাকরি প্রার্থীদের।

এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘উপকমিটির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। তবে আরও অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করে জামুকা। তাই ৬ ও ৮ জানুয়ারি আবারও শুনানি নেয়া হবে। তারপর তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’

জানা যায়, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ৪ হাজার ৭৯২ জন প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করে ৩০ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২০ নভেম্বর ৪ হাজার ৪৪৩ জন এবং ৮ ডিসেম্বর ১৬৮ জনসহ মোট ৪ হাজার ৬১১ জনকে নিয়োগ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু ঝুলে যায় বাকি ১৮১ জনের ভাগ্য। এরমধ্যে ১২৪ জনই মুক্তিযোদ্ধা কোটার প্রার্থী। তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করতে ১ অক্টোবর জামুকার সদস্য মো. মোতাহার হোসেন এমপিকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের উপকমিটি গঠন করে জামুকা। অন্যরা হলেন জামুকার সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার এমপি ও মেজর (অব.) ওয়াকার হাসান বীর প্রতীক।

উপকমিটি ২২ অক্টোবর পিএসসির সুপারিশপ্রাপ্ত ১২৪ জনের মুক্তিযোদ্ধা অভিভাবকদের সাক্ষাৎকার নিয়ে তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। প্রতিবেদনে কারও ব্যাপারে ‘আপত্তি’ না করে সব প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে সুপারিশ করা হয়। এতেই মূলত বিপত্তি দেখা দেয়। কারণ জামুকা কর্তৃক গঠিত উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটি থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন থেকে তিন ধরনের খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ‘ক’ তালিকা হচ্ছে যাচাই-বাছাই কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত তালিকা। যাদের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলে মনে করা হয়। ‘খ’ হচ্ছে কমিটির দ্বিধাবিভক্ত মতের ভিত্তিতে করা তালিকা। অর্থাৎ তাদের বিষয়ে উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির একটি অংশ সায় দিয়েছে এবং অপর অংশ বিরোধিতা করেছে। আর ‘গ’ হচ্ছে কমিটির নামঞ্জুর করা তালিকা। অর্থাৎ এ তালিকার আবেদনকারীদের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলে স্বীকার করা হয় না। পিএসসির সুপারিশপ্রাপ্ত ১২৪ জনের মধ্যে কোনো তালিকায় নাম নেই এমন সংখ্যাই ৩৪। জামুকায় কোনো প্রতিবেদন নেই এমন সংখ্যা ২৭। ‘ক’ তালিকায় ১০ শতাংশের উপরে ২৯ জন এবং নিচে আছে ১৪ জন। বাকি ৮ জনের ব্যাপারে তেমন কোনো সমস্যা নেই। ‘ক’ তালিকাভুক্ত ৪৩ ও সমস্যাহীন ৮ জনসহ ৫১ জনের ব্যাপারে ইতিবাচক প্রতিবেদনে জামুকার কোনো আপত্তি নেই। প্রশ্ন উঠেছে ‘গ’ তালিকার ৮ জন, কোনো তালিকায় নাম না থাকা ৩৪ জন এবং প্রতিবেদন না পাওয়া ২৭ জনসহ বাকিদের কিসের ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। আবার উপকমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ১২৪ জনকেই নিয়োগের জন্য ছাড়পত্র দেয়া হলে ‘গ’ তালিকাভুক্ত ৮ জন, কোনো তালিকায় নাম না থাকা ৩৪ জন এবং প্রতিবেদন না পাওয়া ২৭ জনসহ সবাইকে মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও সনদ বহাল রাখতে হবে। অর্থাৎ তাদের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলে স্বীকার করে নেয়ার নামান্তর। এটি করা হলে এতদিনের যাচাই-বাছাই নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে মূলত অধিকতর শুনানির সিদ্ধান্ত দিয়েছে জামুকা।

তবে জামুকার এমন সিদ্ধান্তে নিয়োগপ্রার্থীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিয়োগবঞ্চিত একজন যুগান্তরকে বলেন, তার উপজেলায় আইনি জটিলতার কারণে কোনো যাচাই-বাছাই হয়নি। ফলে সেখানে বলা হয়েছে কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। অথচ আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা সবই পাচ্ছেন। তাহলে কেন আমার নিয়োগ আটকে যাবে?

নিয়োগবঞ্চিত আরেকজন বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। বিশেষ বিসিএসে ডাক্তার হয়েছি জেনে পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি পাড়া-প্রতিবেশীরাও খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু ভেরিফিকেশনে নিয়োগ আটকে যাওয়ায় আমরা বিব্রত। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা। অথচ আমার নিয়োগ আটকে যাওয়ায় তিনি মুক্তিযোদ্ধা কিনা, এ নিয়েও গুঞ্জন চলছে এলাকাবাসীর মধ্যে। এটি আমাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক ও হতাশার।’

ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী - dainik shiksha গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.005795955657959