আলোচিত কলেজছাত্রী মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় আসামী বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেছেন, মুনিয়ার মৃত্যুর জন্য দায়ী আনভীর সোবহান। মুনিয়াকে হত্যা ও দোষীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়ে বুধবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন : দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত ও পরিচালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানা ও বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের অর্থ সম্পাদক নাঈমা খালেদ মনিকা।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ড ও অন্যান্য প্রাপ্ত নমুনা থেকে এটা স্পষ্ট গুলশানে ছাত্রীর মৃত্যুর জন্য সায়েম সোবহান আনভীর দায়ী। অথচ মিডিয়া থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন কর্তাব্যক্তিরা সায়েম সোবহান আনভীরকে বাঁচাতে মরিয়া চেষ্টা করছে। এর আগে আমরা দেখেছি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে ধর্ষক শাফাতকে জামিন দেয়া হয়েছে। সায়েম সোবহানকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।
কী ঝামেলায় পড়েছিল কলেজ ছাত্রী মোসারাত, নানা রহস্য
ছাত্রীর লাশ, বসুন্ধরার এমডির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
নেতারা আরও আরও বলেন, আমরা এমন একটা সমাজে বসবাস করছি যেখানে প্রতিয়িত সায়েম সোবহান আনভীরদের মত লম্পটের জন্ম নিচ্ছে । সমাজের একটা পঁচাগন্ধময় রুপ এই ঘটনার মধ্য দিয়ে বেড়িয়ে আসলো। সায়েম সোবহান আনভীরদের এই লাম্পট্য উচ্ছৃঙ্খলতার পেছনে যেমন ব্যক্তির ভূমিকা থাকে তেমনি ব্যক্তি যেহেতু সমাজের বাইরের কেউ না তাই এই সমাজব্যবস্থাকেও আমাদের কাঠগরায় দাঁড় করাতে হবে। আজকের দিনে এই সমাজব্যবস্থাকে নেতৃত্ব দিচ্ছে পুঁজিবাদী আর্থসামাজিক ব্যবস্থা।
যা আছে সেই কলেজ ছাত্রীর ডায়েরিতে
কী ঝামেলায় পড়েছিল কলেজ ছাত্রী মোসারাত, নানা রহস্য
বিক্ষোভ সমাবেশে নেতারা আরও দাবি করেন, গত ৫০ বছরে এই ব্যবস্থাকে চালিয়ে নিয়েছে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত। গত ১২ বছর ধরে আওয়ামীলীগ গায়ের জোরে, রাতের আধারে ভোটের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে। তাদের এই ক্ষমতায় থাকার পদ্ধতি পুঁজিপতিদের তোয়াজ করা এবং তাদের লুটপাট, চুরি, দূনীর্তির পৃষ্টপোষকতা করা। বসুন্ধরা গ্রুপ হলো এই রকম পুঁজিবাদী বিগ বিজনেস হাউজ। সায়েম সোবহান আনভীররা হলো এই রকম বিজনেস হাউজের মালিক। ফলে আওয়ামী লীগের সাথে এই ধরণের মানুষদের সম্পর্ক কেমন হবে তা গত দুই দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সায়েম সোবহান এর ছবির মধ্য দিয়ে বোঝা যায়। বাংলাদেশের রাজনীতি, সায়েম সোবহান, কপোর্রেট প্রতিষ্ঠান, নীত- নৈতিকতার অবক্ষয়, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, গুম, খুন সবই আজ একাকার হয়ে গেছে। তাই এই ব্যবস্থাকে উচ্ছেদ আজ সময়ের দাবি।
যা আছে সেই কলেজ ছাত্রীর ডায়েরিতে
কী ঝামেলায় পড়েছিল কলেজ ছাত্রী মোসারাত, নানা রহস্য
এদিকে গত সোমবার কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধারের ঘটনা নানা রহস্যের জন্ম দিয়েছে। গুলশানের লাখ টাকা ভাড়ার বাসায় ওই কলেজছাত্রী একাই থাকতেন। ঘটনার পর তার পরিবারের দায়ের করা মামলায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে। মামলা দায়েরের পর আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।
দৈনিক শিক্ষা পরিবারের নতুন সদস্য ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
কী ঝামেলায় পড়েছিল কলেজ ছাত্রী মোসারাত, নানা রহস্য
এদিকে ঘটনার পর আনভীরের সঙ্গে মুনিয়ার অন্তরঙ্গ ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ওই তরুণীর সঙ্গে আনভীরের কি সম্পর্ক ছিল? মুনিয়া আত্মহত্যা করে থাকলে কেন করেছেন? এসব প্রশ্ন সামনে আসে। আদালত থেকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলেও ইতিমধ্যে বসুন্ধরার এমডি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা রয়েছে। এ ঘটনা আত্মহত্যা নাকি অন্য কোনো কারণে তার মৃত্যু হয়েছে এমন নানা প্রশ্ন ঘুরে ফিরে এসেছে। এ ঘটনায় বসুন্ধরা এমডিকে আসামি করা হলেও গতকাল পর্যন্ত তার পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি। বসুন্ধরা গ্রুপও এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি।