প্রথম ওভারেই বিপর্যয়। ১ রানে নেই ২ উইকেট। এরপর আবার তামিম ইকবালও হাতে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়লেন। বাংলাদেশ দল তখন মহাবিপদে। দুবাইয়ে লঙ্কানদের বিপক্ষে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে এমনই বিপদে পড়েছিল টাইগাররা, যেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো বেশ কঠিন ছিল। মুশফিককের বীরত্বে শ্রীলঙ্কাকে ২৬২ রানের টার্গেট দিয়েছে বাংলাদেশ।
সেই কঠিন কাজটিই করেন মোহাম্মদ মিঠুন আর মুশফিকুর রহীম। তৃতীয় উইকেটে ১৩১ রানের বড় জুটি গড়ে দলকে খাদের কিনারা থেকে উদ্ধার করেন এই যুগল। তাদের জুটির উপর ভর করেই বড় সংগ্রহ গড়ার স্বপ্ন দেখছিল টাইগাররা।
কিন্তু এই জুটিটি ভাঙার পরই কি যেন হয়ে যায়! ৬৩ রান করে মিঠুন ফেরার পর দ্রুত মাহমুদউল্লাহ আর মোসাদ্দেক হোসেনের উইকেট হারিয়ে ফের বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজ আর মাশরাফি বিন মর্তুজাকে একটু চেষ্টা করেছিলেন, তবে বেশিদূর এগোতে পারেননি। মিরাজ ১৫ আর মাশরাফি ১১ রান করে সাজঘরে ফিরেন।
তবে মুশফিক একটা প্রান্ত ধরে লড়েছেন বীরের মতো। সতীর্থদের আসা যাওয়ার মাঝেও দাঁতে দাঁত চেপে এগিয়ে গেছেন বাংলাদেশ দলের এই ব্যাটিং ভরসা। তুলে নিয়েছেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি, যেটি তার ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ওয়ানডে শতক।
নবম উইকেটে মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে ২৬ রানের একটি জুটি গড়েন মুশফিক। ১০ রান করে মোস্তাফিজ রানআউটের কবলে পড়েন। এমতাবস্থায় সবাইকে অবাক করে দিয়ে মাঠে নেমে যান তামিম ইকবাল। ওভারের শেষ বলটি এক হাতেই ঠেকিয়ে দেন তিনি।
এরপর মুশফিক একাই লড়েছেন। অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেছেন। শেষ ওভারে ১৪৪ রান করে অবশেষে থামেন তিনি। ১৫০ বলে ১১ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কায় গড়া তার ইনিংসটা ক্যারিয়ারসেরা, বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস। তার এমন বীরত্বপূর্ণ ইনিংসে ভর করে শেষপর্যন্ত ২৬১ রানে অলআউট হয় টাইগাররা, ৩ বল বাকি থাকতে।
লঙ্কানদের পক্ষে সবচেয়ে সফল ছিলেন মালিঙ্গা। দীর্ঘ এক বছর পর ওয়ানডে দলে ফেরা এই পেসার ২৩ রানে নেন ৪টি উইকেট।
৬ দলের অংশগ্রহনে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান খেলবে ‘এ’ গ্রুপে। অন্য গ্রুপে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান ও হংকং।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষ), মাহমুদউল্লাহ, মোহাম্মদ মিঠুন, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: উপুল থারাঙ্গা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, কুশাল পেরেরা (উইকেটরক্ষক), কুশাল মেন্ডিস, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ (অধিনায়ক), থিসারা পেরেরা, দাসুন শানাকা, লাসিথ মালিঙ্গা, সুরাঙ্গা লাকমাল, আমিলা আপোনসো,দিলরুয়ান পেরেরা।