বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলায় বাইতুল ফালাহ নূরানী মাদ্রাসায় দশ বছরের এক শিশু শিক্ষার্থীর পায়ে শিকল পরিয়ে তার সঙ্গে ছয় কেজি ওজনের ভারী কাঠ ঝুলিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। পাথরঘাটা পৌর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাজার ব্রিজ সংলগ্ন বাইতুল ফালাহ নূরানী মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থী সিফাত উল্লাহর সাথে এ ঘটনাটি ঘটে।
পাথরঘাটা থানার ওসি এস.এম জিয়াউল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার শিক্ষক নবী হোসেনকে গতকাল সোমবার পুলিশ আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।
ঘটনার স্বীকার শিশু শিক্ষার্থী সিফাত উল্লাহ (১০) জানায়, কয়েকদিন ধরে তাকে পায়ে শিকল পরিয়ে কাঠের টুকরো জুড়ে দিয়ে পাঠশালায় পাঠদান করানো হচ্ছিল। সোমবার সকালে শিক্ষক নবী হোসেন বাইরে গেলে আমি সকালের নাস্তা খেতে বাজারের মধ্যে ইদ্রিসের হোটেলে যাই। এ সময় পথচারীরা আমাকে দেখে ছবি তুলতে থাকে। তখন বাজারের মধ্যে হইচই পড়ে যায়। পরে ওই শিক্ষক এসে আমাকে মাদ্রাসায় নিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে পাথরঘাটা থানা পুলিশ খবর পেয়ে শিকলবন্দী অবস্থায় আমাকে উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানান, গত জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে সিফাতকে বাইতুল ফালাহ নূরানী মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়। প্রথম দিকে সে স্কুলে পড়ত। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির এক তারিখ থেকে মাদ্রাসায় লেখাপড়ার চাপ বাড়লে ৫ ফেব্রুয়ারি সে পালিয়ে যায়। পরে তার বাবা সিফাতকে পাঠশালায় এনে তার শিক্ষককে বলেন, তাকে শিকলে বেঁধে রাখার জন্য।
সিফাতের বাবা পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের মো. ছগির মোল্লা জানান, সিফাতকে বাড়ির পাশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরে স্কুল ফাঁকি দেওয়ায় তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়। মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় শিকল বেঁধে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য মাদ্রাসার শিক্ষককে অনুরোধ করা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে পাথরঘাটা থানার ওসি এস.এম. জিয়াউল হক জানান, সিফাতের মা আয়শা বেগম বাদী হয়ে শিশু আইনে মামলা করলে শিক্ষককে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।