কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পড়া না পারায় মধ্যযুগীয় কায়দায় শিক্ষকের নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন কওমি মাদরাসার ছাত্র আবু আইয়ুব আনছারি (৮) নামের এক ছাত্র। শুক্রবার বিকালের দিকে হাসপাতালে তাকে ভর্তি করেন। শিশু নির্যাতনের অভিযোগে রৌমারী থানা পুলিশ ১ জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
নির্যাতনের শিকার ছাত্র আবু আইয়ুব আনছারি জামি’আ ইসলামিয়া এমদাদুল উলূম কওমি মাদরাসার ছাত্র ও উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বাইমমারী গ্রামের আব্দুল্লাহর ছেলে।
এ ঘটনায় মাদরাসাটির পরিচালক নুরুল্লাহ, সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও সচিব জয়নাল আবেদীন জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে রৌমারী হাসপাতালে দায়ীত্বরত চিকিৎসক অলোক কুমার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, রোগীর শরীরে বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ছাত্রের বাবা আব্দুল্লাহ অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার ছেলেকে বড় আলেম হওয়ার জন্য কওমি মাদরাসায় ভর্তি করি। সে ভালোভাবে পড়াশোনাও করছে। প্রায় দিন হুজুরের মোবাইল ফোনে ছেলের খোঁজ খবর নেই। কয়েক দিন থেকে আমার ছেলের সাথে কথা বলতে দেয়না হুজুর। ছেলের খবরের অপেক্ষার পর তার দাদির বাড়ি থেকে হঠাৎ ফোন দিয়ে আমাদেরকে আসতে বলে। এ অবস্থায় আমরা এসে দেখি আমার ছেলের শরীরের বিভিন্ন অংশে মারধরের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। গুরতর অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য রৌমারী হাসপাতালে ভর্তি করি। ছেলেকে আঘাতের কথা বাইরে প্রকাশ করতে নিষেধ করেন হুজুর। হুজুরদের এমন আচরণে ছেলেকে ওই মাদরাসায় পড়ানো মোটেই সম্ভব নয়। তারা মানুষ নয় অমানুষ।
শিশু ছাত্রকে নির্যাতনের বিষয়ে মাদরাসার সভাপতি কাবিল উদ্দিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, অভিযুক্ত শিশু নির্যাতনকারী সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও সচিব জয়নাল আবেদীনকে কমিটির সিদ্ধান্ত মতে বহিষ্কার করা হবে। আরেক অভিযুক্ত শিক্ষক ও মাদরাসা পরিচালক নুরুল্লাহকে শুক্রবার পুলিশ গ্রেফতার করে কুড়িগ্রাম জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
এ ব্যাপারে রৌমারী থানার অফিসার ইনর্চাজ ইমতিয়াজ কবির জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে মাদরাসা পরিচালক নুরুল্লাহ নামের একজনকে গ্রেফতার করে কুড়িগ্রাম জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।