শিক্ষকের মাথায় মল ঢালার ভিডিও ভাইরাল - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকের মাথায় মল ঢালার ভিডিও ভাইরাল

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক: |

ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে বিরোধের জেরে একজন মাদ্রাসা শিক্ষকের মাথায় মল ঢেলে দেয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। রোববার থেকে ভিডিওটি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নির্যাতনের শিকার শিক্ষক মাওলানা মো: আবু হানিফ বাদী হয়ে মামলা করেছেন। গতকাল (রোববার) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মো. মিনজু, মো. বেল্লাল ও মো. মিরাজ হোসেন।

ভিডিওটি দেখুন: 

জানা যায়, বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামের দারুস সুন্নাত  দাখিল মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মো: আবু হানিফের মাথায় মল ঢেলেছেন স্থানীয় জাহাঙ্গীর খন্দকার ও মাসুম সর্দার গং।  আবু হানিফ স্থানীয় নিকাহ রেজিস্টারও। মাদ্রাসার জমি নিয়ে বিরোধ এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদে নির্বাচন করে হেরে যাওয়ায় সুপারের ওপর ক্ষুব্ধ হন জাহাঙ্গীর। শনিবার বিকেলে পথিমধ্যে দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটায়।

আবু হানিফ দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘১১ (মে) খুব ভোরে ফজরের নামাজ শেষে হাঁটতে বের হয়েছিলাম। তখন জাহাঙ্গীর মৃধা ও মাসুম সরদারের নেতৃত্বে অনেকে মি‌লে আমাকে রাস্তায় আটক করে লাঞ্ছিত করে। সামাজিকভাবে আমাকে অসম্মানিত করার জন্য ওরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’

তিনি বলেন, চক্রটি মাদ্রাসার জমি দখল করার চেষ্টা করছিলো। এই চক্রটি নানাভাবে বিনা অনুমতিতে মাদ্রাসার জমিতে বিভিন্ন কার্যক্রম করে আসছিল। আমি এতে বাধা দিই। এ নিয়ে মামলাও চলছে। আমি মামলার বাদী। এ কারণে ওরা আমার ওপর ক্ষিপ্ত। সেই সাথে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি  পদেও এই দলের লোক জাহাঙ্গীর জায়গা পায়নি। সভাপতি হয়েছেন এখানকার সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির রত্না হাওলাদারের মনোনীত ব্যক্তি। ওরা আমাকে নির্যাতন করেছে।

বিষয়টি নিয়ে আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম।
            মাওলানা মো: আবু হানিফা
 
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে কাঠালিয়া ইসলামিয়া দারুসসুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন হয়। নির্বাচনে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু হানিফ এক সভাপতি প্রার্থীর পক্ষ নেন। এর জের ধরে গত শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আবু হানিফ মসজিদ থেকে বের হলে তাঁকে ডেকে নিয়ে প্রকাশ্যে তাঁর মাথায় মলমূত্র ঢেলে দেয় পরাজিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর খন্দকার ও তাঁর সহযোগীরা। অপদস্থকারীরা এ দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করে। বিষয়টি কাউকে জানাতে চাননি অধ্যক্ষ। তবে অপদস্থকারীরা পরে এই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। ভিডিওটি ভাইরাল হলে তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশ ঘটনা তদন্তে মাঠে নামে।
 
পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আবু হানিফ বিষয়টি ভুলে যেতে চেয়েছিলেন বলে জানান। পরে পুলিশের আশ্বাসে তিনি ওই ঘটনায় গতকাল বাকেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ গতকালই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে।
 
অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিরা হলেন পরিচালনা পরিষদের পরাজিত প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর খন্দকার, তাঁর সহযোগী জাকির হোসেন জাকারিয়া, মো. মাসুম সরদার, মো. এনামুল হাওলাদার, মো. রেজাউল খান, মো. মিনজু, সোহেল খন্দকার, মিরাজ হোসেন। তাঁরা সবাই একই এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে জাহাঙ্গীর খন্দকার জাতীয় পার্টির স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। অন্যদের রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি।
 
আবু হানিফ লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, গত ফেব্রুয়ারিতে মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের নির্বাচনে তিনি সভাপতি প্রার্থী এইচ এম মজিবর রহমানের পক্ষ নেন। নির্বাচনে মজিবর রহমান বিজয়ী হলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাহাঙ্গীর খন্দকার তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হন। এরপর থেকেই জাহাঙ্গীর খন্দকার ও তাঁর সহযোগীরা তাঁকে (অধ্যক্ষ) বিভিন্ন সময় হুমকিধমকি দিয়ে আসছিলেন। সবশেষ গত শুক্রবার ফজরের নামাজের পর তিনি মসজিদ থেকে বের হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁর পথ রোধ করেন। বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একজন তাঁর হাত ধরেন। অপর একজন তাঁর মাথায় মলমূত্র ঢেলে দেন। এ সময় উপস্থিত সবাই উল্লাস করেন। এ দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেন তাঁরা। 

বাংলাদেশ অধ্যক্ষ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন। 

শিক্ষক নেতা মো: নজরুল ইসলাম রনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও অপরাধীদের শাস্তি দাবি করেছেন। 

ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035719871520996