এমপিও নীতিমালা ২০১৮’র স্থগিত করে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিকরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সাক্ষাতের দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করেছেন নন এমপিও শিক্ষকরা। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গণঅবস্থান অব্যাহত রেখেছেন আজ রোববারও (২০ অক্টোবর)। শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধের পর শিক্ষক-কর্মচারীরা অনশন কর্মসূচি আজ রোববার পর্যন্ত স্থগিত করে।
আজ সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে নন-এমপিও শিক্ষকদের বৈঠক হবে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষকদের সাক্ষাতের সুনির্দিষ্ট তারিখ না পেলে বা এমপিও নীতিমালা সংশোধন করার আশ্বাস না পেলে আমরণ অনশন শুরু করার হুশিয়ারি দিয়েছেন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত বৃহস্পতিবার ভারতে অবস্থানরত শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপুমনির সাথে টেলিফোনে ঘন্টাখানেক কথা হয় শিক্ষক নেতাদের। কিন্তু ওই কথায় আশ্বস্ত হতে পারেননি বলে দৈনিক শিক্ষাকে জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার। তবুও, মন্ত্রীর কথায় আমরণ অনশন শুরু করেননি তারা।
এদিকে ননএমপিও শিক্ষকদের অপর সংগঠনের সভাপতি মো: এশারত আলী বলেছেন তারা এই আন্দোলনের সাথে নেই।
ননএমপিও শিক্ষকদের একাংশের গণঅবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, নীতিমালা ২০১৮ পরিশিষ্ট ‘খ’-এ নিম্ন মাধ্যমিক (৬ষ্ঠ-৮ম) শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ১৫০জন। কিন্তু ‘খ’ এ নিম্ন মাধ্যমিক (৬ষ্ঠ-৮ম) শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও ফলাফল চাওয়া হয়নি। তাহলে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো কোন মানদণ্ডে এমপিও করা হবে, বিষয়টি আমাদের নিকট স্পষ্ট নয়।
পরিশিষ্ট ‘ক’ এ (৬ষ্ঠ-১০ম) শ্রেণি পর্যন্ত সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে শহর পর্যায়ে ৩শ’ জন এবং মফস্বলে ২শ’ জন। আবার বালিকা বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে শহরে ২শ’ জন, মফস্বলে ১শ’ জন। কিন্তু পরিশিষ্ট ‘খ’ এ উভয় প্রতিষ্ঠানের জন্য পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৪০ জন। যদি ২শ’ জনে ৪০ জন পরীক্ষার্থী হয় সে অনুযায়ী আনুপাতিক হারে ১৫০ জনে ২৬ জন এবং ১শ’ জনে হতে হবে ১৩ জন। পরিশিষ্ট ‘খ’ কলেজ (উচ্চ মাধ্যমিক) শহর সহশিক্ষায় (১১-১২) ২শ’ জন শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৬০ জন আবার নারীশিক্ষায় ১৫০ জন এ পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৬০ জন। ২শ’ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৬০ জন পরীক্ষার্থী চাওয়া হলে ১৫০ জনে ৪৫ জন হবে। মফস্বলে সহশিক্ষা ১৫০ জন শিক্ষার্থীতে পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৪০ জন। নারী শিক্ষায় ১২০ শিক্ষার্থীর মধ্যে চাওয়া হয়েছে ৪০ জন পরীক্ষার্থী। ১৫০ জন শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ৪০ জন পরীক্ষার্থী হলে ১২০ জনের ক্ষেত্রে হবে ৩২ জন। পরিশিষ্ট ‘খ’ স্নাতকে (১১-১৫) তে সহশিক্ষায় শহরে ২৫০ জন শিক্ষার্থীতে পরীক্ষার্থী ৬০ জন পরীক্ষার্থী কিন্তু এখানে স্নাতক শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৫০ জন। কিন্তু পরীক্ষার্থী ৬০ জন, যা সম্পূর্ণ অসংগতিপূর্ণ। আবার নারীশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থী ১৫০ জনের ডিগ্রী স্তরে শিক্ষার্থী ৩০জন এর বিপরীতে ৪০জন পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে এবং এইচএসসি বিএম স্তরে প্রতি ট্রেডে শিক্ষার্থী ৩০ জনের বিপরীতে ৪০জন পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে। যাহা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
অনুরূপভাবে মাদরাসা, কারিগরি ও বিএম কলেজে উল্লেখিত সমস্যাগুলো ২০১৮ এমপিও নীতিমালায় বিদ্যমান। আমাদের জানামতে আবেদন চাওয়ার সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের জাতীয় হার ৭০ শতাংশর নিচে ছিল। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শুধুমাত্র স্তর এমপিও’র নামে শিক্ষক এমপিও’র পরিবর্তে প্রতিষ্ঠান এমপিও অপকৌশল বলে তারা উল্লেখ করেন।