বরগুনার পাথরঘাটা পৌরসভায় বিদ্যালয়ের প্রবেশপথে এক ছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ছাত্র আনোয়ার হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ভিডিও ধারণের পর তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে ভাইরাল করা হয়। তবে এ বিষয়টি নিয়ে মামলা নেওয়া হচ্ছিল না বলে অভিযোগ তুলেছিলেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা। বিষয়টি নিয়ে গতকাল শনিবার দৈনিক শিক্ষাডটকমে সংবাদ প্রকাশের পর ভুক্তভোগী ছাত্রীর মাকে থানায় ডেকে নিয়ে ছাত্রে বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে পাথরঘাটা থানা পুলিশ।
বিষয়টি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ সরকার। তিনি বলেন, ওই ছাত্রীর মা রুমা আক্তার বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন ২০২০ এর ১০ তৎসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৯(১)/৩৫ ধারায় পাথরঘাটা থানায় মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা অপ্রাপ্তবয়স্ত হওয়ায় তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হলো না।
গত বুধবার বিদ্যালয় ছুটির আগেই অভিযুক্ত ছাত্র সহপাঠীর ব্যাগ ক্লাস থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রবেশপথে অপেক্ষা করে। ছুটির ঘণ্টা বাজলে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে আসে। ব্যাগ আনতে গেলে ছাত্রীকে চুম্বন করে ওই ছাত্র। অপর এক সহপাঠী দৃশ্যটি মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে ছড়িয়ে দেয়।
ছাত্রীর মা জানান, এক প্রতিবেশী ঘটনার দিনই ভিডিও ফুটেজ আমাকে দেখালে আমি মেয়েকে মারধর করি। মেয়ে আমাকে বিস্তারিত বললে, আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অবহিত করি। প্রধান শিক্ষক ছাত্রের মাকে ছেলেকে নিয়ে আসার জন্য বললেও তিনি তা করেননি। অভিযুক্ত সেই ছাত্র তার মেয়েকে বহু আগে থেকেই উত্যক্ত করতে। এ বিষয়ে পরিবারে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাননি।
তিনি আরও জানান, প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত ছাত্রের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেও ব্যার্থ হলে শুক্রবার রাত নয়টার দিকে পাথরঘাটা থানার গিয়ে বিষয়টি ওসি আবুল বাশারকে জানান এবং সেই আপত্তিকর ভিডিওটি তাকে দেখিয়ে মামলা করতে চান। কিন্তু ওসি দীর্ঘক্ষণ তাদের বসিয়ে রেখে মামলা না নিয়ে তার ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দিয়ে পরে যোগাযোগ করতে বলেন। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ পর ওসি আবুল বাশার ডেকে নিয়ে মামলা নিয়েছেন।
পাথরঘাটা থানার ওসি আবুল বাশার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রীর নিরাপত্তা জোড়দার করা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে তাদের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. তোফায়েল হোসেন সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে দুই জনের নামে মামলাটি দায়ের করেছেন। জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে আসামিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।