সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমদকে বদলির দাবি জানিয়ে উপজেলার অর্ধশতাধিক প্রাথমিক শিক্ষক তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। রোববার (১৩ জানুয়ারি) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর এ অভিযোগ দেন শিক্ষকরা। শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌস গত বছরের ৮ আগস্ট শাল্লায় যোগদানের পর থেকেই নানা অজুহাতে শিক্ষকদের হয়রানি ও উৎকোচ আদায় করছেন। নীতিমালা লঙ্ঘন করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে বদলি বাণিজ্য ও সরকারি বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাৎ করছেন।
অভিযোগে শিক্ষকরা উল্লেখ করেন, মোহাম্মদ ফেরদৌস শাল্লায় যোগদানের কিছুদিন পরই মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে শিক্ষক সুমিতাকে বদলির আদেশ দেন। আগুয়াই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অঞ্জলী রানী দাস ৫ মাস অনুপস্থিত থাকার কারণে তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তার ৫ মাসের বেতন স্থগিত করেছিলেন। কিন্তু ফেরদৌস গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে অনুপস্থিত থাকা সেই ৫ মাসের বেতন ৪২ হাজার ৬৩৫ টাকা ছাড় দেন। এ ছাড়া তিনি ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপের বরাদ্দকৃত ২৫ হাজার টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য মালপত্র ক্রয় বাবদ ৫০ হাজার টাকা এবং আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ ১০ হাজারসহ মোট ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০১৮ সালে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন সরবরাহ খরচ শেষে উদ্বৃত্ত ৬৫ হাজার টাকা ব্যাংক হিসাবে জমা না করে আত্মসাৎ করেন।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ ফেরদৌসের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মোহাম্মদ ফেরদৌস ইতিপূর্বে জেলার তাহিরপুর উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা ছিলেন। অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে তাকে তাহিরপুর থেকে জগন্নাথপুর উপজেলায় বদলি করা হয়। কিন্তু জগন্নাথপুরের শিক্ষকরা তাকে সেখানে যোগদানে বাধা দিলে শাল্লায় বদলি করা হয় তাকে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পঞ্চানন বালা বলেন, শাল্লা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুইজন সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।