ভোলা সরকারি কলেজের শিক্ষা সফরের গাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ হামলায় চোখ হারালেন ভোলা সরকারি কলেজের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার নাম জান্নাতুল ফেরদৌস মিশু। এর ফলে প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে ভোলা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার ক্লাস বর্জন করে রাস্তায় নেমে এসেছে শত শত শিক্ষার্থী। তাদের অভিযোগ, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গত মঙ্গলবার ভোলার দক্ষিণ আইচায় বাসযোগে শিক্ষা সফরে যাচ্ছিলেন তারা। এ সময় সকালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জামাল মেম্বারের নির্দেশে তার ভাইসহ ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা হামলা চালায় বাসটিতে। বাঁশ-লাঠি দিয়ে ভাঙচুর করে তারা।
ইটপাটকেল করে হতাহত করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। শুধু তাই নয়, বাসটিকে আটকে রেখে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা মোবাইল, স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটপাট করে। পরে বাসটিকে উদ্ধার করে দক্ষিণ আইচা থানার পুলিশ। তবে হামলাকারীদের কাউকে আটক করেনি পুলিশ।
অতর্কিত ওই হামলায় বাসের জানালার গ্লাস ভেঙে জান্নাতুল ফেরদৌস মিশুর বাম চোখ ঢুকে মারাত্মক জখম হয় তার বাম চোখ। পরে তাকে স্থানীয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, তিনি চোখে দেখবেন কিনা তা বৃহস্পতিবার জানা যাবে। মিশুর চোখের প্রদীপ জ্বলবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নন তারা। বড় ধরনের অপারেশন করা লাগবে। প্রচুর অর্থেরও প্রয়োজন রয়েছে তাতে।
এ বিষয় দক্ষিণ আইচা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুম তালুকদার বলেন, এ পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।
কেন অকারণে বাসটিতে হামলা করা হয়েছে জানতে চাইলে মাসুম তালুকদার বলেন, জামাল মেম্বারের ৪ বছরের ছেলেকে একটি প্রাইভেটকার চাপা দিয়ে মেরে ফেলে মঙ্গলবার। এ সময় ওই রাস্তা দিয়ে ভোলা কলেজের শিক্ষা সফরের বাসটি যাওয়ার সময় স্থানীয় ওই হামলা চালায়।
এদিকে, বুধবার শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে ভোলা জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম সিদ্দিকী এবং পুলিশ সুপার মোক্তার হোসেন বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে। সুষ্ঠু বিচার না পেলে আন্দোলন কর্মসূচি দিবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।