শিশু, শৈশব, শিক্ষা এগুলো উন্নত জাতি গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের কাছে সব চাইতে উপেক্ষিত বিষয়গুলোর একটি হচ্ছে শিশু শিক্ষা। বাস্তবে ‘শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার’, ‘শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড’ এগুলো এখন শুধুই মুখের বুলি। শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে জাতির মেরুদণ্ড কী মজবুত হবে? আমরা বুঝে না বুঝে দিনের পর দিন তো শিক্ষার মেরুদণ্ডই ভেঙে ফেলছি। অসংখ্য শিক্ষাবিদ, উচ্চ শিক্ষিত লোকজন থাকার পরও কেন এমনটা হচ্ছে তা বোধগম্য নয়। মুখে মুখে সবাই বলেন, ‘শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। তাই তাদের যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে গড়ে তুলতে পারলেই তৈরি হবে সুখী-সমৃদ্ধ সমাজ ও দেশ। এতে করে যাবতীয় অনৈতিক কাজকর্ম কমে আসবে।’ কিন্তু উচ্চারিত এই বাক্য আমরা নিজেরাই বিশ্বাস করছি না বা করতে পারছি না।
বর্তমানে আমাদের দেশে শিশু শিক্ষা বহু ভাগে বিভক্ত। এ ধারা আগামী প্রজন্মের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করে আসছে। মা, মাতৃভাষা ও মাতৃভূমি সকলের কাছে পরম শ্রদ্ধার বিষয়। শিশু শিক্ষার এই বেহাল দশা, মা মাতৃভাষা ও মাতৃভূমির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে জানার অন্তরায়। ইসলাম ধর্মে বর্ণিত আছে ‘মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত’। জন্মভূমিকে ভালোবাসা ঈমানের অঙ্গ। ত্রিশ লাখ শহীদ ও অগণিত মা-বোনের ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের এই বাংলাদেশ। কওমি শিক্ষায় প্রকৃত ধর্মীয় আলেম তৈরি করে থাকেন। পরকালের সুখ, শান্তি ও ইসলাম ধর্মের প্রসারে তাঁদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তারা আগামী প্রজন্ম মাতৃভূমি, মাতৃভাষা সম্পর্কে জ্ঞান না রেখে বা অবহেলা করে প্রকৃত ঈমানী শিক্ষা কতটুকু বাস্তবায়িত করবে, তা বোধগম্য নয়।
অপরদিকে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় দিবসসহ বিশেষ দিবস পালনের তেমন গুরুত্ব দেয়া হয় না। শিশুরা দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির জ্ঞান লাভ করতে না পারায় মাতৃভূমি, মাতৃভাষার প্রতি তাদের ভালোবাসা জন্মায় না। বড় হয়ে নিজের প্রতি ভালোবাস ছাড়া, দেশ সমাজ তথা পরিবেশের প্রতি মমতা জন্মায় না। বিদেশি ভাবধারায় শিক্ষা অর্জন করে তারা বড় হয়ে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গড়ে ওঠে।
এদিকে কিন্ডারগার্টেন নামক শিক্ষা শিশু মনোবিজ্ঞান বহির্ভূত বই ও খাতার বোঝা চাপিয়ে দেয়। যা মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক শিশুদের শরীরের ১০ শতাংশের বেশি ওজনের ব্যাগের বোঝা বহনের প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। কিন্তু কে শুনে কার কথা। শিশু বেশি বেশি বই পড়ছে। অশিক্ষিত, মহাশিক্ষিত প্রায় সকলের মাঝে এ নির্মম আনন্দ উপভোগ করতে দেখা যায়। এ আনন্দ আমাকে ব্যাঙ ও শিশুর খেলাকে মনে করিয়ে দেয়। ব্যাঙের ওপর ঢিল মারা, যেমন শিশুর নিছক আনন্দ তেমনি শিশুর লেখাপড়ায় যন্ত্রণার নির্দয় আনন্দ। সাধারণ মানুষের সন্তানদের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক বিদ্যালয় যা শিক্ষক সংকটসহ নানা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে আছে। আমাদের দেশে শিশু শিক্ষার জন্য যে একটা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় আছে তা অনেকটা অবহেলিত। স্বরাষ্ট্র, অর্থ, সংস্থাপন, শিক্ষাসহ সকল মন্ত্রণালয়ই সর্বমহলে যথেষ্ট সমাদৃত। গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগিসহ সকল মন্ত্রণালয়ের ক্যাডার সার্ভিস বিদ্যমান। একমাত্র বিশাল কর্মচারীর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের নিজস্ব ক্যাডার সার্ভিস নেই। এ কারণে মেধাবীরা শিশুদের বা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কাজ করতে আগ্রহী হয় না। সকল শিশুর জন্য অভিন্ন পাঠ্যক্রম ও বিভিন্ন ধারার আলাদা বই নির্ধারণ করা হোক। মেধাবীদের প্রাথমিক শিক্ষায় আগ্রহী করার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ক্যাডার সার্ভিস সৃষ্টি করা জরুরি।
প্রতিটি শিশু পরিবারের পরম আকাক্সক্ষার ধন। ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকল মা গর্ভকালীন শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে সদা সতর্ক থাকার চেষ্টা করেন। পরিবারের সদস্যরাও শিশুর জন্ম সুস্থ, সুন্দর ও স্বাভাবিক করার প্রয়াসে মাকে কঠোর পরিশ্রম থেকে বিরত রাখেন। পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্যসহ বিশেষ পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকেন। আজকাল অধিকাংশ মাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে দেখা যায়। শিশুর জন্মের সাথে সাথে স্বর্গীয় প্রভায় আলোকিত হয়ে ওঠে পুরো গৃহ। পরিবারে বয়ে যায় আনন্দের জোয়ার। পরিবারের সকল সদস্যের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ায় শিশুর দেখাশোনা করা। সকলের সুদৃষ্টি থাকে পরিবারের নতুন অতিথির দিকে। শিশু তার হাসি-কান্না, চাহনির মাধ্যমে আনন্দ, দুঃখ, ব্যথা, চাহিদা প্রকাশ করে থাকে। মা সহজেই শিশুর মনের ভাব বুঝতে পারেন। মায়ের সাথে শিশুর গড়ে ওঠে নিবিড় সম্পর্ক। মায়ের একটুখানি পরশ শিশু মনে এনে দেয় অনাবিল আনন্দ ও তৃপ্তি। এই আনন্দের মাঝেই মা তার গর্ভকালীন সীমাহীন দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণাকে ভুলে থাকেন। মায়ের আদর, পরিবারের স্নেহের বন্ধন সবকিছুই ফিকে হয়ে আসতে থাকে শিশুর শিক্ষাজীবনে প্রবেশের পর থেকে। শৈশবে শিশুরা পরিচিত হতে থাকে চারপাশের দ্বৈত সত্ত্বার মানুষের সাথে। তাদের বুঝতে কষ্ট হয় কোনটি সত্য। শিক্ষাজীবন শুরুর পূর্বরূপ না পরবর্তী রূপ কোনটি ছলনা। এর উত্তর কি কারো জানা আছে? তার চাইতেও বড় প্রশ্ন যে, শিক্ষার নামে শিশুরা জীবন-মন-প্রাণ উজাড় করে দিচ্ছে, কী দিচ্ছে সেই তথাকথিত শিক্ষা? এই শিক্ষাপ্রাপ্ত শিশুরা কি নৈতিকতা-অনৈতিকতার মধ্যে কোনো সীমারেখা টানতে পারছে? বাবা-মাসহ বড়দের প্রতি যথাযথ সম্মান, ভালোবাসা প্রদর্শন করতে পারছে? সমাজের সদস্যদের সুখ-দুঃখ কী তাদের স্পর্শ করছে? সম্ভবত উত্তরগুলো সবারই জানা। আমাদের প্রতিনিয়ত জীবনচারিতায় ক্রমশ প্রকাশিত হচ্ছে উত্তরগুলো। যা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মোটেই মঙ্গলজনক নয়।
আজ নৈতিকতার আদর্শের শিক্ষা শিশুকে দেয়া প্রয়োজন। শৈশব থেকে আমরা নানা নীতি বাক্য পড়ে আসছি। ‘সদা সত্য কথা বলিও’, ‘অসৎ সঙ্গ ত্যাগ কর’, ‘যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলিও না’। বাস্তবে এই বাক্যগুলোর কতটুকু আমরা ধারণ করতে পেরেছি, তা সত্যিই ভাবনার বিষয়। শুধু মুখে মুখে নৈতিক শিক্ষার বাক্য না শিখিয়ে ব্যবহারিক কাজের মাধ্যমে শিক্ষাকে জীবনের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। সামান্য একটি উদাহরণ যেমন- বিদ্যালয় ও বাড়িতে কাগজপত্র ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট ঝুড়িতে নিয়মিত ফেলার অভ্যাস গঠনের মাধ্যমে পরিবেশের সুরক্ষার পাঠ শুরু হতে পারে। ভালো কাজ, সততার জন্য সাপ্তাহিকভাবে স্বীকৃতি, পুরষ্কার প্রদান, সহপাঠীদের সাথে মিলমিশ, উপরের শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতি সম্মান, স্নেহ ইত্যাদির প্রতি শিক্ষকের সুদৃষ্টি থাকতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী টিফিন না আনলে বা শিক্ষা উপকরণের অভাব হলে সকলে মিলেমিশে তার অভাব দূর করা, অন্যান্য নৈতিক কাজ যেমন সালাম, শিষ্ঠাচার, আচার-আচরণের পরিবর্তন, সাংস্কৃতিক কর্মকা-, বিতর্ক প্রতিযোগিতা খেলাধুলাসহ পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি পত্রিকা ও নানা জ্ঞান সমৃদ্ধ বই পাঠের অভ্যাস করতে হবে। শিশুর বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রয়োজন হয় পরিবেশকে জানার। মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজনদের সম্পর্কে জানা, তার এলাকার নাম, পরিবেশের সবকিছুর নাম বলতে পারা। ধীরে ধীরে শিশুর হাতে তুলে দিতে হবে বিভিন্ন রঙের ছবি সংবলিত বই। এর পাশাপাশি ছড়া আবৃত্তি, রং দিয়ে মনের মতো আঁকাআঁকি করতে দেয়া। আঁকাজোকার মধ্য দিয়ে লেখার অভ্যাস গঠন শুরু করতে হবে। কিন্তু এর পরিবর্তে আমরা কী করছি? আমরা আদরের সোনামণিদের ওপর শিক্ষার নামে নির্মম যন্ত্রণা উপহার দিচ্ছি। শিশু শিক্ষার প্রারম্ভে অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও উচ্চশিক্ষিত সকলে একযোগে শিশুকে বাংলা, ইংরেজি বর্ণমালা শেখানোর প্রচেষ্টায় লিপ্ত থাকেন। শিশুর মানসিক সামর্থ্যকে বিবেচনা না আনায়, তার আগ্রহকে গুরুত্বহীন করে তোলা হচ্ছে। যার ফলে শিশুর পাঠগ্রহণ আজ তার কাছে নিরানন্দ হয়ে উঠেছে। নামীদামী বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির প্রয়াসে শিশুকে তার শৈশবের স্বর্গীয় আনন্দকে বিসর্জন দিয়ে শিখতে হয় বড়দের জ্ঞান, বয়স, রুচি ও সামর্থ্যরে শিক্ষা, যা তার জন্য অতিরিক্ত বোঝা স্বরূপ। শিশুরা তোতা পাখির মতো অনেক বড় বড় কঠিন শব্দ মুখস্থ বলতে পারে। অথচ শিশু বিষয়বস্তু সম্পর্কে কোনো জ্ঞান বা ধারণা রাখে না।
শিশুদের জ্ঞানহীন ‘জ্ঞানার্জন’ অভিভাবকদের পুলকিত করে থাকে। চলতে থাকে সারাদিন শুধু লেখাপড়া। শিশুর জীবন থেকে বিদায় নেয় সকাল-বিকালের সূর্য দেখা, খেলাধুলা, সহ পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমসহ সকল বিনোদন। সকালে বাসায় পড়া, স্কুলে পড়া, কোচিং ক্লাসের পড়া, রাত জেগে শুধু পড়া আর লেখা নিত্যদিনের রুটিন হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের সন্তানরা আরাম-আয়েশ, বিনোদন, খেলাধুলাকে বিসর্জন দিয়ে শুধু পড়ছে তো পড়ছেই। এই পড়ালেখা শিশুকে কতটা বিকশিত করছে, সমাজকে কতটুকু উপকৃত করছে, দেশকে কী দিচ্ছে বিষয়গুলো নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে। শিশু মনোবিজ্ঞান বহির্ভূত শিক্ষা শিশুদের জোর করে শেখানোর পক্ষে যুক্তি হচ্ছে, এই বয়সে যদি লেখাপড়ার ওপর চাপ না দেয়া হয় তবে বড় হয়ে পড়ার অভ্যাস করাতে সমস্যা হবে।
প্রত্যেক কাজের জন্যই সময় নির্ধারিত রয়েছে। মাতৃদুগ্ধ পানের মেয়াদ যেমন নির্দিষ্ট, তেমনি নির্ধারিত রয়েছে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সময়, প্রথম শ্রেণির ভর্তির বয়স, এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার বয়স, চাকরির বয়স নির্ধারিত আছে। কিন্তু শিশু শিক্ষার জন্য বয়সের বিষয়টিকে গুরুত্বহীনভাবে দেখা হচ্ছে। প্রথম শ্রেণি থেকে পরীক্ষা দিতে দিতে শিশুর পরীক্ষা অভ্যাস গড়ে ওঠবে কিংবা পরীক্ষা ভীতি কমে যাবে, তা খোঁড়া যুক্তি। পরীক্ষার যন্ত্রণায় হারিয়ে যেতে বসেছে শিশুর আনন্দময় শৈশব। শিশুর খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চা, গল্প, কবিতা, ছড়ার বই পড়া, ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের মাধ্যমে জ্ঞানার্জন, নৈতিক শিক্ষাসহ ব্যবহারিক শিক্ষা সব আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর পড়া, স্কুল, কোচিং যেন শিশুর জীবন। পরীক্ষার ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষিত, নিরক্ষর সকলের মাঝে ঐক্যবদ্ধ সুর। শিশুকে ভালোভাবে পাস করাতেই হবে। এই প্রতিযোগিতায় সমৃদ্ধ হচ্ছে কোচিং, নোট, গাইডসহ পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর মিষ্টি ব্যবসায়ীর বাণিজ্য। শিশুদের জন্য পরীক্ষা অনেকটা হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসার মতো। শরীরে পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা না করে যেমন লক্ষণ দেখে বা শুনে রোগীকে ঔষুধ দেয়া হলে তাতে রোগীর বিপদের আশঙ্কা থাকে।
আমাদের পরীক্ষা ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধ কিছু প্রশ্ন খাতায় লিখলে ভালোভাবে পাস করা যায়। কিন্তু বলার যোগ্যতা, নৈতিক শিক্ষা অর্জন, পাঠ্যবইয়ের বাইরে বই পড়ার যোগ্যতা, সাংস্কৃতিক কর্মকা- ও খেলাধুলায় অংশগ্রহণসহ ভবিষ্যতের আদর্শ নাগরিক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যায় না। এই পাস জাতীয় জীবনে এনেছে অস্বস্তিকর পরিবেশ। অপরদিকে শিশুর শৈশব হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। শিশুর শৈশব বিপন্ন না করে আদর্শ মূল্যায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে সৃষ্টি করা হোক যথার্থ জ্ঞানসমৃদ্ধ শিক্ষার পরিবেশ। হাসি, খুশি, আনন্দময় হবে শিশুর জীবন। বয়স, রুচি সামর্থ্য অনুযায়ী দেয়া হোক শিশুর শিক্ষা। শিশুর ওপর চলমান শিক্ষাব্যবস্থার যন্ত্রণা বাল্যবিবাহের চাইতেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে সমাজে। বাল্যবিবাহের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নির্দিষ্ট ছেলে, মেয়ে বা তার পরিবার। অথচ শিশু শিক্ষার এই যন্ত্রণায় শিশু হারাচ্ছে শৈশবের আনন্দ।
শিশুকে জ্ঞান নির্ভর পড়াশোনা থেকে দূরে রাখার ফলে শিশু, পরিবারসহ সমগ্র জাতিই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আগামী প্রজন্ম গড়ে ওঠছে অনেকটা বিকলঙ্গ জ্ঞান নিয়ে। শিশুর সুন্দর জীবন ও ভবিষ্যতের জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে এগিয়ে আসতে হবে। শিশুর বিপন্ন শৈশবকে আনন্দময় করার ভাবনা ছড়িয়ে পড়ুক সকলের মাঝে।
মো. সিদ্দিকুর রহমান : সম্পাদকীয় উপদেষ্টা, দৈনিক শিক্ষাডটকম, সভাপতি, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ।