সনদের বৈধতা নেই তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের, একটির ভর্তি বন্ধ - দৈনিকশিক্ষা

সনদের বৈধতা নেই তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের, একটির ভর্তি বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সনদের বৈধতা নেই। আর একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভর্তি বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভর্তির বিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতন করতে সনদের বৈধতা না থাকা ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা-বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি এবং দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার বিরুদ্ধে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ইউজিসি। আর ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে সতর্কতা জানিয়ে গতকাল রোববার গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ইউজিসি। একই দিনে ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে কমিশন থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে অভিভাবক ও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা-বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি এবং দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হয়। ইউজিসি জানিয়েছে, বর্তমানে ইবাইস ইউনিভার্সিটির অনুমোদিত কোনও ক্যাম্পাস ও ঠিকানা নেই। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব ও আদালতে একাধিক মামলা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার পদে কোনও ব্যক্তি নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে কোনও পদেই আইনানুযায়ী বৈধভাবে কেউ নিয়োজিত নেই। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে বৈধ কোনও কর্তৃপক্ষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কারিকুলাম মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় সব অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রামের বৈধতা হারিয়েছে। ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১৭ এবং ১৯ ধারা অনুযায়ী, বৈধ সিন্ডিকেট এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ও এর ফল এবং অ্যাকাডেমিক সনদের আইনগত কোনও বৈধতা নেই।

আমেরিকা-বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির সম্পর্কে গণবিজ্ঞপ্তিতে ইউজিসি জানিয়েছে, এই ইউনিভার্সির উল্লিখিত ঠিকানায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী ফ্লোর স্পেস, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার মতো কোন সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চ্যান্সেলর তথা রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারার পদে কোনও ব্যক্তি নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে কোনও পদেই আইনানুযায়ী বৈধভাবে কেউ নিয়োজিত নেই। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে বৈধ কোনও কর্তৃপক্ষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কারিকুলাম মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া সব অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম বৈধতা হারিয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১৭ এবং ১৯ অনুযায়ী, বৈধ সিন্ডিকেট এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা, ফল এবং অ্যাকাডেমিক সনদের আইনগত কোনও বৈধতা নেই।

দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা নিয়ে ইউজিসি বলছে, ইউনিভার্সি অব কুমিল্লার কোনও অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। উল্লিখিত ভবনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় যে, ভবনের পঞ্চম তলায় দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। দুই মাস আগে ভবনের কর্তৃপক্ষ (বাংলাদেশ পুলিশ কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড) দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার লোকজন এবং মালামাল বের করে দিয়ে পঞ্চম তলায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে এবং সব ধরনের ইউটিলিটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। সেই মোতাবেক পঞ্চম তলায় গিয়ে দেখা যায়, ফ্লোরের প্রবেশ কক্ষে তালা ঝুলানো রয়েছে এবং সেখানে লেখা রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, পলওয়েল কারনেশন শপিং সেন্টার।

ইউজিসি আরও বলছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বর্তমান বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্যদের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ কমিশনে পাওয়া গেছে। কমিশন থেকে এখনো পর্যন্ত দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চ্যান্সেলর তথা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত ডিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার পদে কোনও ব্যক্তি নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে কোনও পদেই আইনানুযায়ী বৈধভাবে কেউ নিয়োজিত নেই। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে বৈধ কোনও কর্তৃপক্ষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কারিকুলাম মেয়াদোত্তীর্ণ বিধায় সব অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম বৈধতা হারিয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১৭ এবং ১৯ ধারা অনুযায়ী, বৈধ সিন্ডিকেট এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ও এর ফলাফল এবং অ্যাকাডেমিক সনদের আইনগত কোনও বৈধতা নেই।

এদিকে কুমিল্লার ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন। গত রোববার কমিশনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখের স্বাক্ষরিত চিঠিতে ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ দেয়া হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে কমিশন কর্তৃক ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সরেজমিন পরিদর্শনের রিপোর্টের বরাত দিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অপ্রতুল শিক্ষক সংখ্যা, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব, গবেষণার অনুপস্থিতি, আচার্য কর্তৃক নিযুক্ত বৈধ কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতি, শিক্ষাসহায়ক ক্যাম্পাসের অনুপস্থিতি, লাইব্রেরিতে প্রয়োজনীয় পাঠ্যবইয়ের অপ্রতুলতা রয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কারিকুলাম মেয়াদ উত্তীর্ণ। 

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ধারা ১৮ এবং ২০ অনুযায়ী সিণ্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তি, শিক্ষাদান, সব পরীক্ষা ও ফল অনুমোদনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। আইনের ধারা ১৭ এবং ১৯ অনুযায়ী ভাইস-চ্যান্সেলর একাধারে সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি। আইনের ৩১ ধারা অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি তথা আচার্য সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগ দিয়ে থাকেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি তথা আচার্য কর্তৃক নিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলরের অবর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা ও ফলের আইনগত কোন বৈধতা নেই।  

ইউজিসি জানিয়েছে, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে আচার্য নিযুক্ত ভিসি এবং প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও আচার্য কর্তৃক নিযুক্ত উপাচার্যের অবর্তমানে অন্য কারো সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সভার আইনগত কোন বৈধতা নেই।  এসব কারণে কমিশন পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে ইউজিসি।

ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004209041595459