বগুড়ার শাজাহানপুরের জামুন্না পল্লীবন্ধু স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক সহকারী শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যাহতি এবং দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের টিসি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি খোরশেদ আলম। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগেরও সভাপতি। এ ঘটনায় বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে ওই শিক্ষক ও দশম শ্রেণির ২৪ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়ে আলাদাভাবে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, জামুন্না পল্লীবন্ধু স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজমুন নাহারের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তনের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। বুধবার একটি টিভির কয়েকজন সাংবাদিক এসে বিষয়গুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে চান। ক্লাস চলাকালীন কিছু শিক্ষার্থী বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সভাপতি খোরশেদ আলম ও তাঁর ছেলে নুরে আলম নাহিদ, অধ্যক্ষ নাজমুন নাহার ও সহকারী শিক্ষক মকছেদ আলী তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। সাংবাদিকরা চলে যাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের টিসি দিয়ে বিদ্যালয়ে থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন।
সহকারী শিক্ষক আব্দুর রউফ জানান, দশম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস নেওয়ার সময় সাংবাদিকদের দেখে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ছেড়ে বেরিয়ে যায়। এ সময় তাদের বাইরে যেতে নিষেধ করা হয় এবং যারা বের হয়েছে তাদেরও ক্লাসে ফিরিয়ে আনা হয়। এ সময় সভাপতি খোরশেদ আলম ও তাঁর ছেলে এসে শিক্ষার্থীদের টিসি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। পাশাপশি শিক্ষার্থীদের বের হওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিতে তাঁকে চাপ সৃষ্টি করেন। তাতে রাজি না হওয়ায় সভাপতি ও তাঁর ছেলে তাঁকেও বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখান। তাঁকে চাকরিচ্যুত করারও হুমকি দেন।
এ ব্যাপারে খোরশেদ আলম শিক্ষার্থীদের টিসি দিয়ে বের করে দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যদি বেয়াদবি করে তাহলে প্রতিষ্ঠান তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই পারে। শনিবার (আজ) ওই সব শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের নিয়ে স্কুলে বৈঠক ডেকেছি। বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ সহকারী শিক্ষক আব্দুর রউফকে অব্যাহতির বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি আরো বলেন, ‘ক্লাস চলাকালে শিক্ষার্থীরা কিভাবে বাইরে আসতে পারে। নিশ্চয় ওই শিক্ষকের ইন্ধনেই তারা এই আচরণ করেছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ফুয়ারা খাতুন জানান, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে একই উপজেলায় পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে তিন এসএসসি পরিক্ষার্থীকে মারধর করে প্রবেশপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। পরিক্ষার্থীরা উপজেলার ডেমাজানী শ ম র উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র।