বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার অসীম কুমার সরকারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশীষ কুমার নন্দী স্বাক্ষরিত এক নোটিশে আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, চলতি ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় নিশানবাড়ীয়া ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার অসীম কুমার সরকার একক ক্ষমতা বলে ও কতিপয় শিক্ষকের যোগসাজশে অনিয়মের আশ্রয় নেয়। তিনি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির কোনো তোয়াক্কা না করে ডিয়ার পরিবর্তন করে নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের ২৪৮নং রুপচাঁদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্র থেকে ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ১০৪নং গুলিশাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে স্থানান্তর করেন। এছাড়াও তিনি নিয়ম ভেঙ্গে অন্য বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষককে কেন্দ্র সচিব নিয়োগ দেন।
২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে রুপচাঁদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ২৮৬ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। ১০টি কেন্দ্র কেটে নেয়ায় ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ১৮৮ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। অপরদিকে, পূর্ব গুলিশাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ৩৭৬ জন এবং ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ৫২৯ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। পূর্ব গুলিশাখালী অতিরিক্ত শিক্ষার্থী হওয়ায় আসন ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খেতে হয় কর্তপক্ষকে।
আর এ অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বাচ্চু। তিনি বলেন, একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করে নিজ স্বার্থ চরিতার্থে এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, রুপচাঁদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়য়ে ৩টি কক্ষ ব্যবহার হয়নি। অপরদিকে, পূর্ব গুলিশাখালী কেন্দ্রে দোতলা, তৃতীয় তলায় কষ্ট করে উঠে শিশু শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হয়েছে। এ কেন্দ্র প্রতিটি বেঞ্চে ৩ জন করে শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। এ ধরনের অনিয়মের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দাবি জানান তিনি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচীব আশীষ কুমার নন্দী বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার অসীম কুমার সরকার আমাকে না জানিয়ে অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। তার এমন অনিয়মের কারণে তাকে আমি শোকজ করেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরীক্ষা কমিটির সভাপতি মো. কামরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। তবে উপজেলা পরীক্ষা কমিটির অনুমোদন ছাড়া কোনো কেন্দ্র থেকে বিদ্যালয় পরিবর্তন করা যায় না। তিনি এ ধরনের অনিয়ম করতে পারেন না।