দেশের ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট অবকাঠামো ভৌত উন্নয়নের জন্য ২৫৬১ কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিকের অবকাঠামো ও ভৌত সুবিধার উন্নয়নে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। এছাড়া দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাহিদা অনুযায়ী ২৪টি ইমাজিং টেকনোলজি চালু করা।
প্রকল্পের অধীনে ২৪টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, গ্লাস অ্যান্ড সিরামিক ইনস্টিটিউট, গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউটের ১০তলা একাডেমিক কাম ওয়ার্কশপ নির্মাণ, ১৮টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একতলা ও দুই তলা ওয়ার্কশপের ভবন ৬তলা পর্যন্ত করা, ৪৩টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছয় তলা ছাত্রী হোস্টেল নির্মাণ, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের ভবনে আরো তলা নির্মাণ। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের দেশে বিদেশে প্রশিক্ষণ। ছয় হাজার ৭৫০ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ। আজ ২৯ মে দৈনিক মানবজমিনে প্রকাশিত এ খবরে এসব তথ্য জানা যায়্।
মানবজমিনের খবর অনুযায়ী যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, বই ও গাড়ি ক্রয় করা। প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়ে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রতি বছর ২৫ হাজার ডিপ্লোমা-ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে দাবি করছে সরকার। এক লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি করা সম্ভব হবে বলেও দাবি তাদের।
বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিদ্যমান ‘পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসমূহের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৫৬১ কোটি ৯২ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় সাহায্য দুই হাজার ১৮৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় গত বছরের জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০শে জুন পর্যন্ত। গত ২৬শে ডিসেম্বর প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন হলেও এখন পর্যন্ত কাজ শুরু হয়নি। প্রকল্পে মোট ৮০ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিবে ভারত।
অর্থাৎ প্রকল্পের যত ধরনের কেনাকাটা হবে তার সবটুকু অর্থায়ন করবে ভারত। আর বাংলাদেশ শুধু ট্রেনিং, নিয়োগ প্রক্রিয়া, গাড়ি ভাড়া, গাড়ি কেনা এসব কাজের অর্থায়ন করবে বাংলাদেশ সরকার। তবে ভারতের অর্থায়ন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ভারতের অর্থায়নে চলমান রেলওয়ে উন্নয়ন প্রকল্প, আইসিটি খাতের প্রকল্পে সফলতা আসেনি। এসব প্রকল্প থেকে অভিজ্ঞতা নিচ্ছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, ভারতের নানা শর্তের কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে যেতে একটু জটিলতা দেখা যাচ্ছে।
যত ধরনের কেনাকাটা হবে তা ভারত থেকে কিনতে হবে এবং তাদের নিয়োগ দেয়া কনসালট্যান্টকে দিয়ে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। শুধু তাই নয়, সব টাকা ডলারে ভারতের এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। এ ছাড়াও আরো বেশ কিছু শর্ত নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগে চিঠি দেয়া হয়েছে প্রকল্প থেকে। এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, গত মাসে জিওবি থেকে দুই কোটি ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ভারতীয় অর্থ বরাদ্দ নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে। তাদের নানা শর্ত মানতে হলে এ প্রকল্প ভবিষৎ কী হবে তা বিবেচনা করার জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি দিয়েছি। তিনি বলেন, প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ সামগ্রীর টেন্ডার এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে অনুমোদন করাতে হবে। অন্যদিকে ভারত চাচ্ছে প্রকল্পের আওতায় যেসব পণ্য আনা হবে তা ট্যাক্সমুক্ত রাখতে। এ ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কি মতামত দেয় সেটাও জানতে হবে। এসব কারণে প্রকল্পের মূল কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
সূত্র: মানবজমিন