ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৭৩ ছাত্রী সাইবার হয়রানির শিকার হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার (২০ আগস্ট) রাতে একটি ফেসবুক পেজে আপত্তিকর ক্যাপশন জুড়ে ৭৩ জন ছাত্রীর ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে মিজান বিশ্বাস নামে এ শিক্ষার্থী এ পোস্টগুলো দিয়েছেন। মিজান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও খোবসা উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ভুক্তভোগী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, "Crush & Confession, Islamic University, Bangladesh" নামে একটি ফেসবুক পেজে আপত্তিকর ক্যাপশন জুড়ে ৭৩ জন ছাত্রীর ছবি পোস্ট করা হয়। এতে ক্যাপশনে লেখা ছিল ‘ইবি কাঁপানো সকল সুন্দরী একসাথে, ইমো নাম্বার পেতে লাভ রিয়েক্ট দিয়ে সঙ্গেই থাকুন।’ পোস্টটি দেখার পর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্টকারীর বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে তোপের মুখে পোস্টটি সরিয়ে ফেলে দুঃখ প্রকাশ করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পেজটির ক্রিয়েটর এবং একমাত্র এডমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা মিজান বিশ্বাস। তিনি স্থানীয় খোকসা উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য। এছাড়া ক্যাম্পাস শাখা ছাত্রলীগের সাথেও জড়িত মিজান। তার এই কর্মকাণ্ডে বিব্রত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও।
হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভুক্তভোগী এক ছাত্রী ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘ঘুম থেকে উঠেই আমার ছবিসহ ৭০-৮০ জন মেয়ের ছবি ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পেজে অশ্লীল ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট দেখে হতবাক হয়ে গেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগেকার হয়রানির ঘটনার বিচার করেনি জন্য এর পুনরাবৃত্তি ঘটছে, আরও ঘটবে।’
অভিযুক্ত মিজান বিশ্বাস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘এটা ডাবল মিনিংয়ের পোস্ট। ফান করে দিয়েছি। ইমু নাম্বার দেয়া তো ভাইরাল ডায়লগ। তবুও আমার ভুল হয়েছে; আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। ভিসি স্যারকে জানিয়েছি। তিনি আইটি সেলে একটি নোট পাঠাতে বলেছেন, আমরা অলরেডি পাঠিয়েছি। আইডিগুলো শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।’
এর আগেও একাধিকবার সাইবার হয়রানির শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ করলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন।