সার্ভার জটিলতা : শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরুতেই হোঁচট - দৈনিকশিক্ষা

সার্ভার জটিলতা : শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরুতেই হোঁচট

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

জানুয়ারির প্রথম দিনেই নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে। আর ছয় দিন বাকি থাকলেও এখনও প্রস্ততিমূলক নানা কাজ সম্পন্ন হয়নি। অনেকটা তড়িঘড়ি করে গতকাল শনিবার অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে সাড়ে ৪ লাখ শিক্ষককে । তবে সে কার্যক্রমও হোঁচট খাচ্ছে সার্ভার জটিলতায়।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানিয়েছে, নতুন করে আবার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর, কারিগরি ও মাদ্রাসা মিলে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক আছেন ৮০ লাখের মতো।  সেজন্য এনসিটিবি শিক্ষক ম্যানুয়েল ছাপালেও  এখনও তা শিক্ষকদের হাতে পৌঁছেনি।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, নতুন শিক্ষাক্রমে প্রথাগত পরীক্ষার চেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন বেশি হবে। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত থাকবে না কোনো পরীক্ষা। সারা বছর ধরে নানা কার্যক্রমের ভিত্তিতে তাদের মূল্যায়ন করা হবে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ৬০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে ধারাবাহিক কার্যক্রমের ভিত্তিতে। বাকি ৪০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে পরীক্ষা নিয়ে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে ৬০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন। ৪০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে পরীক্ষার ভিত্তিতে। নবম ও দশম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে ৫০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন। বাকি মূল্যায়ন হবে পরীক্ষার মাধ্যমে। চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণির অন্যান্য বিষয়ে পুরো মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়নে বেশি জোর দেওয়া হবে। এই স্তরে ৭০ শতাংশ মূল্যায়ন পরীক্ষার মাধ্যমে। বাকি ৩০ শতাংশের মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন। এর জন্য প্রয়োজন শিক্ষকদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া।

প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাধ্যমিক শিক্ষকদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের তাদের সংশ্নিষ্ট দুই অধিদপ্তর প্রশিক্ষণ দেবে। নামমাত্র পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ দিয়েই আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা শুরু করতে যাচ্ছে শিক্ষা প্রশাসন। এখন জেলায় জেলায় শিক্ষকদের নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে প্রশিক্ষণ দেবেন। এ ধারাবাহিকতায় গতকাল শুরু হয়েছে ভার্চুয়ালি মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। তবে প্রথম দিনেই হাজার হাজার শিক্ষক প্রশিক্ষণ সার্ভারে প্রবেশ করতে পারেননি। এ পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষণের জন্য নতুন করে তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছে এনসিটিবি। 

সার্ভার জটিলতার বিষয়ে এটুআইর শিক্ষাবিষয়ক একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বিষয়ভিত্তিকভাবে সারা দিনই দেওয়া হচ্ছে। সার্ভারে যখন এক লাখের বেশি মানুষ প্রবেশ করে, তখন সমস্যা তৈরি হয়। তবে সকালের পর থেকে সমস্যার সমাধান করা গেছে।

একাধিক শিক্ষক জানান, সশরীরে উপস্থিতি ছাড়া এসব প্রশিক্ষণ খুব বেশি কাজে লাগবে না। রাজধানীর একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিনে সার্ভার সমস্যার কারণে অনেকে ঢুকতেই পারেননি। আবার দেখা যাচ্ছে, যখন বাংলা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, তখন অন্য বিষয়ের শিক্ষকরাও সার্ভারে বসে আছেন। এতে মূলত সমস্যা তৈরি হয়েছে।

গতকাল সকাল ৯টায় ১ ঘণ্টার বাংলা বিষয় দিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু হয়। এর পর ধর্ম, ইংরেজি, স্বাস্থ্যশিক্ষা, গণিত, শিল্প-সংস্কৃতি, জীবন জীবিকার এক অংশ, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের একটি অংশ নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বাকি বিষয়ে আজ রোববার প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা।

মাউশির পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, প্রশিক্ষণের শুরুতে সার্ভারে সমস্যা হয়েছিল। এর পর সারা দিনই শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন অনলাইনে। বেশি সমস্যা হলে প্রশিক্ষণের দিন বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, নতুন শিক্ষাক্রম চালুর আগে গতকাল শনিবার ও রোববার মাধ্যমিক স্তরের তিন লক্ষাধিক শিক্ষককে ১ ঘণ্টা করে অনলাইনে বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এনসিটিবি চেয়েছিল, ডিসেম্বরের মধ্যে সব শিক্ষককে পাঁচ দিনের (২৭ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর) সশরীরে প্রশিক্ষণ দিতে। তবে মাউশি এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে পারেনি। বাধ্য হয়ে এখন নামমাত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে অনলাইনে। এর পর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পাঁচ দিন সশরীরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শিক্ষক প্রশিক্ষণে ব্যয় হবে ৬৫০ কোটি টাকা। তবে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলার শিক্ষকরা গতকাল জানিয়েছেন, প্রথম দিনে তাঁরা প্রশিক্ষণ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

 

১৮তম প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ - dainik shiksha ১৮তম প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫ হাজার ৪৫৬ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫ হাজার ৪৫৬ সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন - dainik shiksha সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ - dainik shiksha শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল - dainik shiksha শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051889419555664