রামজল মীনা। আর্থিক টানাপোড়নের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও লেখাপড়া চালাতে পারেননি ভারতের রাজস্থান প্রদেশের ৩৪ বছর বয়সী এই যুবক। পরিবারের ভরণপোষণের যোগান দিতে জীবিকার উৎস হিসেবে বেছে নিয়েছেন সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি।
তবে দমে যাননি মীনা। জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএনইউ) সিকিউরিটি গার্ডের কাজের ফাঁকে ধরে রেখেছেন তার পাঠাভ্যাস। আর তার সেই প্রচেষ্টার সফলও পেয়েছেন তিনি। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রহরীর দায়িত্বে ছিলেন, ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এখন সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই স্নাতকে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। পাবলিক সার্ভিসের নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এখন দেশের জন্য কাজ করার স্বপ্ন দেখেন রামজল মীনা।
ভারতের দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মীনা বলেন, ‘আমার লক্ষ্য হচ্ছে সাধ্যমত প্রস্তুতি নেয়া এবং সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া। আমার সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে দেশের জন্য কাজ করতে চাই।’
মীনা তিন কন্যা সন্তানের জনক। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তিনি জেএনইউতে সিকিউরিটির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
‘আমি রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে প্রথম বর্ষের পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হয়। কিন্তু তারপরেও আমি সব সময় জানার মধ্যে থাকতে চাইতাম। মূল ধারার শিক্ষা ছাড়ার পরে আমি একটা বিষয় নিশ্চিত করতে চেয়েছি। সেটা হচ্ছে- যে কোন উপায়ে শিক্ষা ও জানার মধ্যে নিজেকে রাখা। আমি কখনো ঘর থেকে বই ছাড়া বের হই না। আমি সংবাদপত্র থেকে শুরু করে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার বইসহ সব ধরেন বই পড়তাম।’
জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি সম্পর্কে মীনা বলেন, ‘আমি নিয়মিত সংবাদপত্র পড়তাম। এ ছাড়া শিক্ষামূলক ভিডিও এবং নিউজ অ্যাপস আমার ফোনে নিয়মিত দেখতাম। শুধু তাই নয়, আমি যদি ১৫ মিনিট সময়ও পেতাম আমি সেটি লেখাপড়ার জন্য ব্যয় করতে চাইতাম।’