রাজধানীর মহাখালীতে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের ৭ মে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জিন্নাহ কলেজ। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে একদল বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ভেঙে ফেলেছিল কলেজটির সাইনবোর্ড। এরপর ওই কলেজের নতুন নাম দেয়া হয় তিতুমীর কলেজ। হাঁটি হাঁটি পা পা করে কলেজটি পূর্ণ করেছে ৫০ বছর। আজ শনিবার জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপিত হচ্ছে সরকারি তিতুমীর কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী।
এ উপলক্ষে সরকারি তিতুমীর কলেজের সামনের সড়ক অর্থাৎ আমতলী থেকে গুলশান-১ নম্বর মোড় পর্যন্ত সড়কটি সাজানো হয়েছে অপরূপ সাজে। গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকেই জ্বলছে হরেক রকমের বাতি। কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে দুটি মঞ্চ। পুরো ক্যাম্পাসই উৎসবস্থলে পরিণত হয়েছে। কলেজ গেট থেকে শুরু করে প্রতিটি ভবন, আঙিনা, খেলার মাঠ তথা পুরো ক্যাম্পাস সেজেছে বিভিন্ন রঙের বাতি, ফেস্টুনসহ অপরূপ সাজে।
শীত আর কুয়াশায় প্রকৃতি ঢেকে থাকলেও কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কোনো কমতি নেই। এরই মধ্যে ঢাকার বাইরের অনেক দূর থেকেও রাজধানীতে পৌঁছেছেন সাবেক শিক্ষার্থীরা। এমনকি গতকালও অনেকে গিয়েছিলেন উৎসবের প্রস্তুতি দেখতে। কলেজের সামনের সড়ক দিয়ে চলাচলকারী অনেক পথচারী কিংবা যানবাহনের আরোহীকেই কিছুক্ষণের জন্য হলেও থমকে দাঁড়াতে হচ্ছে কলেজটির সামনে।
সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ‘সরকারি তিতুমীর কলেজ পঞ্চাশ বছর উৎসব উদ্যাপন পর্ষদ’ নামে একটি কমিটি করা হয়েছিল। ওই কমিটি ‘আলোকিত ৫০ বছর’ নামে সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের আয়োজন করেছে। আজ সকাল ৯টা থেকে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন দেশের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বরেণ্য শিক্ষাবিদসহ নানা পেশার বিশিষ্টজনরা। অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য যাঁরা রেজিস্ট্রেশন করেছেন তাঁদের সকালেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে উদযাপন পর্ষদের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, যাঁরা রেজিস্ট্রেশন করেছেন তাঁরাই শুধু অংশ নিতে পারবেন। প্রথমে এন্ট্রি বুথ থেকে কার্ড সংগ্রহ করে তারপর অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে হবে। অংশগ্রহণকারীদের জন্য রাখা হয়েছে নানা উপহার। দুপুর ১টায় সমাপ্ত হবে প্রথম পর্বের মূল অনুষ্ঠান। এরপর মধ্যাহ্নভোজ। খাবারের বিরতির পর শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। তখন মূলত তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগ, তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতি, তিতুমীর কলেজ বিতর্ক ক্লাব, বিএনসিসি (এয়ার উইং) তিতুমীর কলেজ কন্টিনজেন্ট, শুদ্ধস্বর কবিতা মঞ্চ, তিতুমীর নাট্যদল, স্কাউট তিতুমীর কলেজ গ্রুপ, বাঁধন তিতুমীর কলেজ ইউনিট এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এরপর অভিনয়, আবৃত্তি, ফ্যাশন শো, বিতর্ক, নৃত্য আর সংগীতে মেতে উঠবে সবাই। এরপর সন্ধ্যা থেকে শুরু হবে অতিথি শিল্পী এবং ব্যান্ড দলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আয়োজনজুড়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের সহযোগিতায় থাকবে বিএনসিসি (এয়ার উইং) তিতুমীর কলেজ কন্টিনজেন্ট এবং রোভার স্কাউট সরকারি তিতুমীর কলেজ গ্রুপ।
জানা যায়, উৎসব উদ্যাপন পর্ষদের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।