সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজে ইফতেকারের যত অপকর্ম - দৈনিকশিক্ষা

সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজে ইফতেকারের যত অপকর্ম

নিজস্ব প্রতিবেদক |

পুরান ঢাকার সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ ইফতেকার আলী।  বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ শিক্ষক হয়েও লিয়েনে অবৈধভাবে বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ পদ বাগানোর অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তাকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিয়ে কলেজটি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। ইফতেকারের বিরুদ্ধে রয়েছে অন্যান্য অনেক অভিযোগ। সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ পদে ইফতেকার আলীর নিয়োগ অবৈধ। তাকে প্রচলিত বিধান অনুযায়ী  কলেজটিতে নিয়োগ দেয়া হয়নি। কলেজটিতে নিষিদ্ধ নোট-গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভুক্তকরণের অভিযোগও রয়েছে। 

অধ্যক্ষ ইফতেকার আলীর বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ ও নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তা তদন্ত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। তদন্তে তার নিয়োগ অবৈধ ও বির্তকিত বলে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ওঠা ‘টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধ গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভুক্তকরণের’ অভিযোগেটির সত্যতাও পেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত কর্মকর্তারা। দুই মাস আগে জমা দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনটির সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন না করে ফ্রিজে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে থাকা ইফতেকার সিন্ডিকেটের সদস্যরা। 

এদিকে আগামী মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের শহিদ মিনার ও ছাত্রী কমনরুমের উদ্বোধন করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদও থাকবেন বিশেষ অতিথি হিসেবে। অনুষ্ঠানের অন্যতম হর্তাকর্তা বিতর্কিত অধ্যক্ষ ইফতেকার।   

জানা যায়, ইফতেকার আলী বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত পরিসংখ্যানের শিক্ষক। তিনি এর আগে ঢাকা কলেজে ছিলেন। তদবির করে লিয়েনে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ পদ বাগান তিনি। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কোষাধ্যক্ষ পদে থেকে ব্যাপক লুটপাট করেছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকও তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে।   

জানা গেছে, অধ্যক্ষ ইফতেকার আলীর বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ ও দুর্নীতির নানা অভিযোগ আসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। অভিযোগে বলা হয়, অধ্যক্ষ ইফতেকার আলীর নিয়োগ অবৈধ। তাকে বেসরকারি কলেজের নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হয়নি। তিনি স্বেচ্ছাচারিভাবে কলেজে পরিচালনা করছেন। এছাড়া শিক্ষকদের হয়রানির অভিযোগ এসেছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযোগে আরও বলা হয়, টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধ গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করেছেন অধ্যক্ষ ইফতেকার আলী।   
 
এ প্রেক্ষিতে ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ৬ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে এসব অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। একই বছর ১৩ সেপ্টেম্বর অভিযোগটি তদন্তে কর্মকর্তা নিয়োগ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। ইফতেকার আলীর বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলো তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আশেকুল হক এবং সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক বনমালী মোহন ভট্টাচার্য্যকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ অক্টোবর অভিযোগটি সরেজমিনে তদন্ত করেন এ কর্মকর্তারা। তদন্তের প্রেক্ষিতে গত ২ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন তারা।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়, অধ্যক্ষ ইফতেকার আলীর নিয়োগ বিতর্কিত এবং তা প্রমাণিত হয়েছে। অধ্যক্ষ হিসেবে তাকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বেতন ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের উন্নয়নের স্বার্থেই সরকারি কলেজের একজন শিক্ষককে লিয়েনে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু ইফতেকার আলীকে যে প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো তা ত্রুটিপূর্ণ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তাকে যে পরিমাণ বেতনভাতা প্রদান করা হচ্ছে তাতে কলেজে উপকৃত না হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। 
 
এছাড়া ইফতেকার আলীর বিরুদ্ধে ওঠা টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধ গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভুক্তকরণের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ইফতেকার আলীর বিরুদ্ধে আসা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগেরও সত্যতা পাওয়া গেছে। এছাড়া অবৈধ উপার্জনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী শিক্ষকদের হয়রানির প্রেক্ষিতে ইফতেকার আলীকে আর্থিক বিষয়াদি পরিচালনার ক্ষেত্রে এবং সবল শিক্ষক কর্মচারীর সাথে সম-আচরণের বিষয়ে যত্নবান হতে হবে বলে মন্তব্য করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। 

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.018409013748169