সরকারি নিয়ম না মেনে ৩০টি জীবন্ত গাছ গোপনে বেচে দিয়েছেন পঞ্চগড়ের বোদার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের জোত মনিরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পানির দামে ওই গাছগুলো কিনে নিয়েছেন তমিজ উদ্দিন নামের এক কাঠ ব্যবসায়ী। রোববার (১৯ আগস্ট) ওই কাঠ ব্যবসায়ীর লোকজন ওই গাছ কাটতে শুরু করেছে। বিদ্যালয়ের বড় বড় ৩০টি গাছ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই অল্প দামে বিক্রি করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, সম্প্রতি জোত মনিরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোবারক আলী ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ চন্দ্র রায় গোপনে বিদ্যালয়ের মাঠের চারপাশের সুশোভিত বড় বড় ইউক্যালিপটাস, কাঁঠাল ও বটগাছ বিক্রির পরিকল্পনা করেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে শুধু ময়দানদীঘি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বারকে জানিয়ে ৩০টি গাছ তমিজ উদ্দিনের কাছে বেচে দেন। প্রায় চার লাখ টাকা মূল্যের ওই গাছগুলো মাত্র ৮০ হাজার টাকায় বেচা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের এক অভিভাবক বলেন, ‘গাছগুলো বিদ্যালয়ের চারপাশে ছায়া দিত। প্রতিটি গাছের বয়স ১৪-১৫ বছর। বড় গাছগুলো বিনা কারণে বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের পরিকল্পনা করছিলেন প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। এত গাছ বিক্রি হলো অথচ আমরা কেউই জানলাম না।’
ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিদ্যালয় মাঠের চারপাশের গাছগুলোর কারণে পাশের জমির ফসলের ক্ষতি হচ্ছিল। তাই তাদের আপত্তির কারণে গাছগুলো কাটার সিদ্ধান্ত হয়।’
জোত মনিরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোবারক আলী বলেন, ‘ময়দানদীঘি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বারের অনুমতি নিয়ে আমরা গাছগুলো ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি।’
ময়দানদীঘি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, ‘ওই বিদ্যালয়ের গাছগুলো তাঁরা কাটবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। আমি বলেছি নিয়ম মেনে গাছগুলো যেন কাটা হয়।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাহজাহান সিদ্দিক বলেন, ‘এ ঘটনায় বোদা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ হাসানকে তদন্ত করে সোমবারের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বোদার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ হাসান বলেন, ‘সরকারি নিয়ম না মেনে ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছ কাটার কথা শুনেছি। আমরা গাছগুলো জব্দ করার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। গাছগুলো জব্দ করার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’