স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশের কিন্ডারগার্টেন তথা ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী। বুধবার (১৯ আগস্ট) এক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে পাঠানো বিবৃতিতে এ দাবি জানান তিনি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের সব কিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। অফিস আদালত, হাট-বাজার, কল-কারখানা, ব্যাংক-বীমা, মার্কেট, দোকান, বিভিন্ন বিনোদন স্থান, পর্যটনকেন্দ্র, গণপরিবহন থেকে শুরু করে সব কিছু খুলে দেয়া হয়েছে বা স্বাভাবিকভাবে চলছে। এছাড়াও হিফজ্খানাও খুলে দেয়া হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ হিফজ্খানা খুলে দেয়ার পর থেকে এই পর্যন্ত কোরস্ শিক্ষার্থী আক্রান্ত হওয়ার খবর আসেনি বা কোনো যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়নি।
সভাপতি বলেন, কোভিড-১৯ বিশ্ব মহামারির কারণে সরকারি ঘোষণা মতে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এই ক্ষতি পোষাবার না হলেও দ্রুততম সময়ে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয় তাহলে শিক্ষকদের আন্তরিকতায় লেখাপড়া কিছুটা হলেও রিকভার করা সম্ভব হবে। আর একটি লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা এখন আর ঘরে নেই। ছোটদেরকে নিয়ে অভিভাবকরা বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র, পর্যটন, হাটে বাজারে, মার্কেটে, রাস্তা ঘাটে যাচ্ছে, গণপরিবহনে চলাচল করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা যে সময়ে ক্লাসে থাকত সে সময়ে তারা বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে, দোকানে, মার্কেটে, পার্কে বা বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে আড্ডা করতে বা ঘোরাফিরা করতে দেখা যাচ্ছে।
এম ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, সরকারের এমন কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি নেই আমরা স্মারকলিপি দিইনি বা যোগাযোগ করে আমাদের কষ্টের কথাগুলো বলিনি, যা বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। প্রথমে আমরা প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেন তথা ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বাঁচাতে প্রণোদনা বা সহজ শর্তে ব্যাংক লোন এবং শিক্ষক হিসেবে সম্মান রক্ষার্থে আর্থিক সহায়তা চেয়েছি, তাতে সরকার কর্ণপাত করেননি। তারপর আমরা অক্ষম হয়ে এই দেশের নাগরিক হিসেবে যে কোনো ধরনের সাহায্য চেয়েছি, তাতেও সরকার দৃষ্টি দেননি। সর্বশেষ ১০ লাখ শিক্ষকের আর যখন জীবন বাঁচে না তখন রোহিঙ্গা মনে করে আমাদেরকে খাদ্য সহায়তা দিতে বলেছি, সরকার এই মানবিক আচরনটিও আমাদের সাথে করেননি। আমাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা না করে সরকার এক অমানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। যা এদেশের ১০ লাখ শিক্ষকের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমরাই একমাত্র সেক্টর, যে সেক্টরে বিগত ৬ মাসে ১ টাকাও আয় হয়নি, তাই শিক্ষরা এই মানবেতর জীবনযাপন করছেন, যা হয়ত এই শিক্ষক সমাজের ইতিহাসের পাতায় লিখা থাকবে। এ অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, সেন্টার ফর ডিজিজি কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যবিধিগুলো মানার শর্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলো দিলে আমরা মোটা ভাত খেয়ে জীরন বাঁচিয়ে ও মোটা কাপড় পরে সম্ভ্রম রক্ষা করে আল্লার ইচ্ছায় কোনো প্রকারে জীবন বাঁচিয়ে, এখনো টিকে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করতে পারব।
বিবৃতিতে দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেন তথা ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ১০ লাখ অবহেলিত শিক্ষকের কথা বিবেচনায় দয়া করে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তারোপ করে দ্রুততম সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে সরকারের কাছে আহ্বান জানান তিনি।