রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের প্রফেসর মো. খাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন একই বিভাগের প্রফেসর ড. মু. আলী আসগর। হত্যার উদ্দেশে তার ওপর হামলার অভিযোগ এনে নগরীর মতিহার থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন থানার অফিস ইনচার্জ এসএম মাসুদ পারভেজ। জামিন অযোগ্য ধারায় এই মামলাটি করা হয়েছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দুপুরে রাবি কৃষি অনুষদ অফিসে এক কর্মচারীর মাধ্যমে কিছু কাগজ ফটোকপি করাচ্ছিলেন ড. আলী আসগর। এ সময় ক্রপ সায়েন্স বিভাগের আরেক শিক্ষক প্রফেসর মো. খায়রুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সজোরে তার মাথায় ঘুষি মারেন। তাকে জোরে ধাক্কা মারেন।
এতে মাথায় আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ড. আসগর। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিয়ে জ্ঞান ফিরে ওই শিক্ষকের। তাকে হত্যার উদ্দেশে প্রফেসর খাইরুল তার ওপর হামলা করেছেন বলে অভিযোগে দাবি করেন তিনি।
এর আগেও ড. আসগর আলীকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে বিভাগের শিক্ষক খায়রুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় গত নভেম্বরে জিডিও করেছিলেন ভুক্তভোগী শিক্ষক ড. আসগর।
বিভাগের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সম্প্রতি ক্রপ সায়েন্স বিভাগে তিন শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রফেসর খাইরুল ইসলামের সঙ্গে প্রফেসর ড. মু. আলী আসগরের মতপার্থক্য তৈরি হয়। অনিয়মের অভিযোগে সেই নিয়োগের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন ড. আলী আসগর।
অন্যদিকে নিয়োগের পক্ষে অবস্থান নিয়ে তৎপর ছিলেন প্রফেসর খাইরুল। এই নিয়োগকে কেন্দ্র করেই উভয়ের মধ্যে চরম দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে মামলার বাদী প্রফেসর ড. মো. আলী আসগর বলেন, বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বর্তমানে আদালতে আমার রিট আবেদনটি বিচারাধীন থাকায় প্রফেসর মো. খাইরুল ইসলাম পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্য আঘাত করেছেন। মামলা তুলে নিতে এর আগেও আমাকে হুমকি দেয়া হয়েছিল।
এ ঘটনায় গত বছরের ৯ নভেম্বর থানায় আমার একটি জিডি করা আছে। ড. মো. আলী আসগর বলেন ‘মনে করি প্রফেসর খাইরুল আমাকে যে কোনো সময় হত্যা করতে পারে। আমি এজন্য আইনের আশ্রয় নিয়েছি। খাইরুলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছি’।
মামলার আসামি প্রফেসর মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার বিষয়ে আমি এখনও কিছু জানিনা। বুধবার প্রফেসর আলী আসগর কৃষি অনুষদ অফিসে আমাকে দেখে নিজেই মাটিতে পড়ে যান। আমি তাকে কোনো আঘাত করিনি। এসব প্রফেসর আলী আসগরের অভিনয় বলে দাবি করেন তিনি’।
মতিহার থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ জানান, বাদীর লিখিত এজাহার পেয়ে মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। মামলাটি তদন্তের ভার পেয়েছেন থানার ওসি তদন্ত পুলিশ পরিদর্শক অলিউর রহমান।