হঠাৎ করেই ৩০ টি স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণের ফাইল চালাচালি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা এবং কয়েকজন দালাল।
অস্বাভাবিক দ্রুত গতিতে হঠাৎ উদয় হওয়া ২০টি কলেজ ও ১০টি স্কুলের এই তালিকা নিয়ে মোটা অংকের ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই ২০টি কলেজ পরিদর্শন ও যাচাইবাছাইয়ের আগে ৫ কলেজের একটি তালিকা হয়েছে। ওই তালিকার সবাই ‘ঘুষ’ দিয়েছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে। মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার গাংনী ডিগ্রি কলেজও ওই পাঁচটির একটি।বাকী চারটি কলেজ হলো : নাচোল ডিগ্রি কলেজ, আশাশুনি কলেজ ও মিঞা জিন্না আলম ডিগ্রি কলেজের নাম রয়েছে। তালিকা সম্বলিত চিঠিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শাখা-৯ এর সিনিয়র সহকারি সচিব কাউসার নাসরিনের স্বাক্ষর রয়েছে। চিঠিটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের মতামত চেয়ে তার দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। মহাপরিচালক বিদেশে থাকাকালীন পাঠানো হয় আবার অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে মতামত দেওয়া হয়।
এর আগে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ১১ জুন শিক্ষা অধিদপ্তরে এক আদেশ বলে একই বছরের ৩০ জুন গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজটি পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শন প্রতিবেন জমা হয় একই বছরের ১২ জুলাই।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি চক্র মেহেরপুরের গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজের নাম ঘষে তুলে দিয়ে কৌশলে গাংনী ডিগ্রি কলেজের নাম ঢুকিয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘষামাজায় প্রচুর টাকা লেনদেন হয় বলে জানা যায়।
হঠাৎ উদয় হওয়া ৩০ প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের এই চক্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন করে যুগ্ম-সচিব, উপ-সচিব ও সিনিয়র সহকারি সচিব এং শিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ শাখার একজন সহকারি পরিচালক ও মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়নের) দপ্তরের একজন নন-ক্যাডার কর্মকতা এবং দুইজন কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে মর্মে অভিযোগ বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষামন্ত্রীর কার্যালয়, দুদক ও শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছেন সংক্ষুব্ধরা। অভিযোগের একটি কপি দৈনিকশিক্ষা অফিসেও পাঠিয়েছেন তারা।
মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. মকবুল হোসেন গত ৮ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি চিঠি লিখেছেন। ‘গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজটি জাতীয়করণে স্বাভাবিক গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কিছু কর্মকর্তা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিদর্শ রিপোর্ট ছাড়াই কিছু ফাইল মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হয়ে আপনার দপ্তর পর্যন্ত চালাচালি করছে।’
৩০টির তালিকায় ঢাকার বধির হাইস্কুল, কালাচাঁপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলাধীন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হাইস্কুল রয়েছে। এছাড়াও বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলাধীন মোংলা কলেজ, ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার মিঞা জিন্নাহ আলম ডিগ্রি কলেজ, ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলাধীন নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলাধীন আমতলী ডিগ্রি কলেজ ও পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলাধীন বাউফল ডিগ্রি কলেজ।