গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ফিসারিজ ফিড মিলের এক কর্মকর্তার দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ভাইরাসের বিস্তার এড়াতে কারখানাসহ ওই এলাকা লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। আক্রান্ত ব্যক্তির নাম মো. ইব্রাহীম (২৮)। তিনি কাপাসিয়া উপজেলার দস্যু নারায়ণপুর এলাকার ছোঁয়া এগ্রো প্রোডাক্টস লিমিটেডের সেলস্ সুপারভাইজার ও একই এলাকার আব্দুল বারেকের ছেলে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুস ছালাম সরকার শুক্রবার (১০ এপ্রিল) দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ছোঁয়া এগ্রো প্রোডাক্টস লিমিটেডের কর্মী ইব্রাহীম গত কিছুদিন ধরে জ্বর, সর্দি ও কাঁশিতে ভুগছিলেন। তিনি জ্বর ও মাথাব্যাথা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসা নিতে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তার করোনা ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ থাকায় চিকিৎসকরা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠায়। শুক্রবার দুপুরে ওই কর্মীর করোনা পজেটিভ প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। বিকেলে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ইব্রাহীমকে বাড়ি থেকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কিভাবে তার দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায় নি।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানান, কারখানাটিতে প্রায় দেড়শ’ জন কর্মী রয়েছে। তাদের বেশিরভাগই কারখানা ক্যাম্পাসের স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন। আক্রান্ত ব্যাক্তি ও তার বাড়ির লোকজন কারখানার অন্য কর্মীদের সংস্পর্শে আসেন। তাই তার বাড়িসহ ওই কারখানা ইতোমধ্যে লকডাউন করা হয়েছে। পরীক্ষার জন্য শনিবার কারখানার প্রত্যেক কর্মী ও আক্রান্ত ব্যাক্তির বাড়ির লোকজনের নমূনা সংগ্রহ করা হবে।
করোনা আক্রান্ত ইব্রাহিম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গত কয়েকদিন ধরে সামান্য জ্বর ও মাথা ব্যাথা অনুভব করছি। অসুস্থ্যতার কারণে গত ৪ এপ্রিল কারখানা থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি যাই। স্থানীয় ডিসপেনসারি থেকে ঔষধ খেলেও জ্বর সারে নি। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বৃহস্পতিবার উপজেলা হাসপাতালে আসি। এসময় চিকিৎসকরা নমূনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠান।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, 'শুক্রবার জুমার নামাজে যাওয়ার সময় মোবাইলে টেলিফোন করে চিকিৎসকরা জানান আমি করোনা ভাইরাস পজেটিভ।'
কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আক্রান্ত ব্যাক্তিটি এলাকায় ঘুরাফিরা করে বাড়ির ও আশেপাশের লোকজনের সংস্পর্শে গিয়েছে। তাই এ ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে শুক্রবার বিকেলে আক্রান্ত ব্যাক্তিকে হাসপাতালে স্থানান্তরের পর পরই পুরো দস্যু নারায়নপুর এলাকাকে লকডাউন করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিটি যাদের সংস্পর্শে গিয়েছে তাদের সম্পর্কেও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, কাপাসিয়ার দস্যু নারায়ণপুর এলাকাস্থিত ছোঁয়া এগ্রো প্রোডাক্টস লিমিটেড নামের এ কারখানায় মাছের খাবার তৈরি করা হয়। কারখানায় মেশিন স্থাপনের জন্য গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভিয়েতনামের দু’সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল আসেন। তারা ১০দিন অবস্থানের পর গত ১৪ মার্চ কারখানা ত্যাগ করেন। ইব্রাহীম তাদের সংস্পর্শে ছিলেন না। তবে কিভাবে তার দেহে এ ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে তা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়।
