অভিভাবকদের দায়িত্বও কম নয় - Dainikshiksha

অভিভাবকদের দায়িত্বও কম নয়

মো. ফায়েজুল ইসলাম |

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ মাথায় নিয়ে গত বৃহসপতিবার শেষ হলো জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা দাঁড়িয়ে থেকে উপভোগ করল সে নাটকের দৃশ্য। সবার হাতে যেন আলাদীনের জাদুর চেরাগ আছে। সেই দৈত্য হাতে হাতে পৌঁছে দিচ্ছে প্রশ্নপত্র, শুধু প্রশ্নপত্র নয় উত্তরপত্রসহ। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের মারফতে জানতে পারি, পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সম্মিলিত লেখাপড়ার খবর। এক মাকে বলতে শোনা গেছে—‘ভালো করে দেখ বাঁদর। গণিতেরটা দেখিসনি। আরিয়ান (ছদ্মনাম) ওটাতে ত্রিশে ত্রিশ পাবে আর তুই…।’ এত ব্যবস্থা, এত চেষ্টা, এত আলোচনা তারপরেও থামছে না প্রশ্নপত্র ফাঁস। কী করবে রাষ্ট্র, আমরাই বা কী করব?

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসকারী, আমাদের নতুন প্রজন্ম ধ্বংসকারী এসব কুচক্রের বিরুদ্ধে যে শুধু রাষ্ট্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আর আমরা বসে থাকব সেটা বোধহয় উচিত হবে না। রাষ্ট্র তার নিজের মতো করে সমস্যার সমাধান করবে আর আমাদের কাজ হবে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করা। একটা বিষয় সকলের ভালো করে জানা যে, আমাদের শিক্ষাঙ্গন একটি একমুখি প্রতিযোগিতার আদর্শ মাঠ। এখানে সবার একমাত্র লক্ষ্য ভালো রেজাল্ট করা। আমরা বাজি ধরি প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ওপর—আমার ছেলেকে এই বানাব, আমার মেয়েকে ওই বানাব ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমরা তাদের ছোটবেলা থেকে এটা শেখাচ্ছি যে, শুধু জ্ঞান ছুঁয়ে যাও অর্জন করার প্রয়োজন নেই। আমরা অভিভাবকরা পরীক্ষার রেজাল্টকে মেধার মানদণ্ড হিসেবে দেখতে অভ্যস্ত। একটি পাবলিক পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হলো তো মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। তারপর যে শিক্ষার্থী ক্লান্তির দীর্ঘশ্বাস ফেলারও সময় পায় না তার ওপর আবার চাপিয়ে দেওয়া হয় কোচিং, প্রাইভেট। এতেই ক্ষান্ত হলে ভালো হতো, এরপর পরীক্ষার আগের রাতে আমরা উঠেপড়ে লাগি প্রশ্নপত্র সংগ্রহে। হ্যাঁ, আমরা অভিভাবকরাই!

অনেক অভিভাবককে দেখেছি টাকা নিয়ে প্রশ্নপত্রের খোঁজে দিনরাত এক করতে। আমরা জানি প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর। এগুলোতে অভিভাবকদের সমপৃক্ততা না থাকলে এই পর্যায়ের একজন শিক্ষার্থী এত টাকা দিয়ে প্রশ্নপত্র কিনতে পারবে না। আমরা অভিভাবকরা প্রশ্নপত্র কিনে সন্তানের সর্বোচ্চ ফলাফল কিনে কী প্রমাণ করতে চাই? আমার সন্তান একদিন বড় মানুষ হবে,এটা চাই? আমরা শুধু তাদের ফলাফলটাই কিনে দিতে পারব—শিক্ষা নয়। আমরা তাদের সুন্দর ভবিষ্যত্ দিতে গিয়ে পরোক্ষভাবে তাদের ভবিষ্যত্ নষ্ট করছি।

প্রশ্নপত্র কেনার মাধ্যমে আমাদের সন্তানদের মনে অবচেতন মনে অপরাধপ্রবণতা বাড়িয়ে তুলি। আমরা তাদের শেখাচ্ছি জীবনের কঠিন সময়গুলোতে অসদুপায় অবলম্বন করতে। অথচ দিনরাত আমরা অনেক নৈতিক গল্প শোনাই তাদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে। রাষ্ট্র তার দায়িত্ব অনুযায়ী এসব কুচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। অভিভাবকদের উচিত হবে এসব কুচক্র এড়িয়ে সন্তানদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করা। এখনই জেগে ওঠার সময় আমাদের ভবিষ্যত্ প্রজন্ম রক্ষা করার।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056588649749756