বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) চিকিৎসকদের দেয়া হয়েছে ভর্তি পরীক্ষার হলের দায়িত্বে। আর সেই পরীক্ষায় অংশ নিতে এসে অসুস্থ হয়ে পরীক্ষায় বসতে পারেনি তিন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। রোববার (১০ নভেম্বর) বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রশাসন সূত্র জানায়, কলা অনুষদ ভুক্ত এ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটে বেলা ১১টায় পরীক্ষা দিতে এসে নরসিংদীর ঘোড়াশালের আফসানা আকতার নামের এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভর্তি পরীক্ষায় কোনো মেডিকেল বুথ না থাকায় পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকরা কোলে করে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে কর্মরত কোনো চিকিৎসকের দেখা পাওয়া যায়নি। এ সময় সেখানে উপস্থিত কর্মচারীরা জানায়, চিকিৎসকরা পরীক্ষার হলে ডিউটিতে আছেন।
তার কিছু পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করলে একজন চিকিৎসক আসেন চিকিৎসা কেন্দ্রে। কিন্তু চিকিৎসা কেন্দ্রে অক্সিজেনের ব্যবস্থা ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি না থাকায় চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয়নি। পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে (রমেক) ভর্তি করা হয়।
এর কিছুক্ষণ পর নীলফামারী থেকে আসা ইয়াসমিন ও পাবনা থেকে আসা রোকসানা ফের অসুস্থ হলে ট্রেচার না থাকায় কোলে করে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিক, বিএনসিসি এবং রোভার স্কাউট সদস্যরা। পরে তাদেরও রমেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। ফলে প্রাথমিক চিকিৎসার অভাবে আর পরীক্ষায় বসা হয়নি তিন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর।
এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ বকুল বলেন, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা যখন ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসে তাদের দায়িত্ব অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে। এ ঘটনা প্রশাসনের চরম উদাসীনতার বহিঃপ্রকাশ।
বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রের শাখা প্রধান (চলতি দায়িত্ব) ডা. এম শাহরিয়ার বলেন, কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি থেকেই চিকিৎসকদের পরীক্ষার হলে ডিউটির দায়িত্ব দেয়া হয়। বাধ্য হয়েই তারা অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি আরও বলেন, শুনেছি আজ বিকেলে ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। আশাকরি আর এ সমস্যা পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে আর থাকবে না।
চিকিৎসককে পরীক্ষার হলের দায়িত্ব কেন দেয়া হলো তা জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামালের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।