ঝড়ের তাণ্ডবে বিধস্ত খানসামা - দৈনিকশিক্ষা

ঝড়ের তাণ্ডবে বিধস্ত খানসামা

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি |

দুই দফায় প্রায় ঘন্টা খানেকের ঝড়ে বিধস্ত দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা। এ ঝড়ে প্রায় হাজারো পরিবারের ঘরবাড়ি ও গাছপালা লন্ডভন্ড হয়েছে। ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে মৌসুমি ফল আম, লিচু, কলা, ভুট্টা ও ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে বিদ্যুতের খুটি উপড়ে পড়ায় পুরো উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন । তবে এখনও কোন হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল বুধবার রাত ১০ টার পর হঠাৎ ঝড়, শিলা বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। এ ঝড় দুই দফায় স্থায়ী ছিল প্রায় ঘন্টা খানেক। এ সময় ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়নের সূর্বণখূলী ওকড়াবাড়ি এলাকায় প্রায় ২ শতাধিক, ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের বালাডাঙ্গী, চকরামপুর, হোসেনপুর, চকসাকোয়া, সরহদ্দ, ভেড়ভেড়ী, টংগুয়া মাদারপীর গ্রামের তিন শতাধিক ও আলোকঝাড়ি ইউনিয়নেও প্রায় দুই শতাধিক বাড়ি ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরো প্রায় ৩-৪ শতাধিক বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়। নষ্ট হয়েছে ঘরে রক্ষিত খাদ্য সামগ্রী। লন্ডভন্ড হয়েছে ঘরের আসবাবপত্র। ছোট-বড় অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ সঞ্চালনের তার ছিঁড়ে বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। ভেঙে গেছে বিদ্যুতের অসংখ্য মিটার। তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ সচল হয়েছে। 

তবে অনেক রাস্তায় গাছ পড়ে এখনও বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বসবাস করছে খোলা আকাশের নিচে। বোরো ধানের ক্ষতি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। ঝড়ে খামারপাড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া পাঁচপীর ফাজিল মাদরাসার শ্রেণিকক্ষসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ ও অফিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঝড়ে ঘর-বাড়ি বিধস্তের সাথে বোরো ধান, ভুট্টা, করলা, শসা, আম ও লিচুর ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাস্তার ওপর পরে থাকা গাছগুলো সরানোর কাজ চলছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা ছুটে চলছেন উপজেলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

উপজেলার সূবর্ণখুলী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ বাসিন্দারা বলেন, শয়নকক্ষে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ রাত ১০-১১ টার দিকে ঝড়ে বাড়ির পাশের বড় বড় গাছগুলো হুড়মুড় করে ঘরের উপর পরে। এতে ঘর ভেঙে যায়। জীবন রক্ষার্থে ঘর ও বেড়া ভেঙে আমরা বের হই। ঝড়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে তারা নিরুপায়। অনেকে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটছে। নষ্ট হয়েছে আবাদি ফসল। ভেঙে গিয়েছে তাদের ঘর-বাড়ি।

ক্ষতিগ্রস্ত খানসামা উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়নের সূর্বণখুলী এলাকা পরিদর্শন করলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ভারপ্রাপ্ত এ টি এম সুজাউদ্দিন শাহ লুহিন, ইউএনও রাশিদা আক্তার, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা পারভীন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা শাহ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ও আংগারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা আহমেদ শাহ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে তাদের তালিকা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এলাকার বিত্তবান সকলকে আসার অনুরোধ জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি অফিসার বাসুদেব রায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছে বোরো ধান ৪৫ হেক্টর, পাট ২৫ হেক্টর, সবজি ১০ হেক্টর, আম ২৫ হেক্টর, লিচু ৩৫ হেক্টর। এছাড়াও ফসলের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারনে মাঠে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ইউএনও রাশিদা আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ি ও কৃষি খাতের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে ইউনিয়ন পরিষদ ও কৃষি বিভাগ কাজ করছে। সেটি হাতে পেলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের খাদ্য সামগ্রী, টিন ও আর্থিক সহায়তা করা হবে।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057058334350586