টাকা ছাড়া মেলে না বিনামূল্যের বই - Dainikshiksha

টাকা ছাড়া মেলে না বিনামূল্যের বই

ফুলবাড়ীয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি |

আব্বা কাম করে ঢাহা। এমনেই পড়াবার চায়না, স্কুল থাইকা মাগনা বই ট্যহা দিয়া কিনতে অইবো শুনলে আরো পড়াবার চাইতনা। তাও আবার ৬৫০ টাকা! মনেঅয় স্কুলে পড়ালেহা আর করবার পাইতাম না। ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণিতে উঠা মাহমুদুল হাসান নামের এক শিক্ষার্থীর মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে এভাবে কথাগুলো বলার সময় দুচোখে পানি টলমল করছিল।

তেলিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যের পাঠ্য বই টাকা ছাড়া পাচ্ছেনা কেউ। সাড়ে ৫শ থেকে সাড়ে ৬ টাকা দিয়ে নতুন বইয়ের গন্ধ নিচ্ছে কোন কোন শিক্ষার্থী। অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ২ থেকে ৩শ টাকা নিয়ে বই আনতে গেলে শিক্ষকরা টাকা ছুড়ে ফেলে দেয় বলে এমন অভিযোগ রয়েছে।

প্রধান শিক্ষক আবতাফ হোসেন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সাড়ে ৫শ টাকা করে নিয়ে নতুন বই দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তিনি দাবি করেন বইয়ের জন্য টাকা নেওয়া হয়নি বার্ষীক চাঁদার জন্য নেওয়া হয়েছে।

উপজেলার বালিয়ান ইউনিয়নের তেলিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৭ শতাধিক। এখনও দুই শতাধিক শিক্ষার্থীও নতুন বই পায়নি। গতকালও বিনামূল্যে বই না পেয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থী বাড়ি ফিরে গেছে।  মঙ্গলবার বিকেলে তেলিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে কথা হয় ৭ম শ্রেণির ছাত্র ইস্রাফিল, আবু সাইদ, আবু ফাহিম, মাহমুদুল হাসান, নিশাদ মিয়া ও ফারুক হোসেনের সাথে। তারা বলেন, আশপাশের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা নতুন বই নিয়ে আনন্দে বাড়ি গিয়ে লেখাপড়া করছে। আর আমরা এখনো নতুন বই পাইনি।

নিশাত মিয়া বলেন, সোমবারের দিন বিদ্যালয়ে ৩শ টাকা নিয়ে গিয়েছিলাম সপ্তম শ্রেণির বই আনতে কিন্তু স্যার বলেছে ৬৫০ টাকার কম আমাকে নতুই বই দিবেনা। ৭ শ্রেণির আরেক ছাত্র বলেন, লিলি ম্যাডামকে ১শ টাকা দিয়ে বই চাইলে ম্যাডাম টাকা ছুড়েমারে।

তেলিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় সামনের মুদি দোকানদার তারা মিয়া বলেন, টাকা ছাড়া নতুন বই দিচ্ছেনা শিক্ষার্থীদের, অনেক শিক্ষার্থী পুরাতন বই আমার দোকানে রেখে বাড়ি চলেগেছেন।  ৮ম শ্রেণির ছাত্র ইমরান হোসেনের অভিভাবক হাবিবুর রহমান বলেন, বিনামূল্যের বই কেন টাকা দিয়ে কিনে কিনতে হবে আমাদের সন্তানদের। এই অনিয়ম দুর্নীতির তদন্তকরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান তিনি।

প্রধান শিক্ষক আফতাব হোসেন সুকৌশলে নতুই বইয়ের জন্য টাকা নেওয়া কথা অস্বীকার করে বলেন বার্ষীক চাঁদার জন্য সাড়ে ৫ করে টাকা নেয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে।  উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন আখতার বলেন, নতুন বই দেয়ার নামে তেলিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে শিক্ষকরা শুনেছি। প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য মতে বার্ষিক চাঁদা কোনভাবেই সাড়ে ৫শ টাকা হতে পারে না, নতুন বই দেয়ার নামে টাকা নিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিরা তরফদার বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনামূল্যে বইয়ের জন্য টাকা নিয়ে দিয়ে থাকলে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029358863830566