ফিসের টাকা নিলেও হিসাবে কম দেখানোর অভিযোগ - Dainikshiksha

ফিসের টাকা নিলেও হিসাবে কম দেখানোর অভিযোগ

খুলনা প্রতিনিধি |

খুলনা খানজাহান আলী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফিসের টাকা নিয়েও হিসাবে কম দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। পুরো টাকা পরিশোধ করলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সাল থেকে ভর্তি হওয়া প্রায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে আরও ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজের অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির দায় তাঁদের কাঁধেই চাপানো হচ্ছে। অধ্যক্ষ দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে টাকা আদায়ে শিক্ষার্থীদের চাপ দিচ্ছেন। বেতন হিসাবের খাতায় পরিশোধ থাকলেও প্রতিটি রসিদ দেখাতে না পারলে গরমিলের টাকা কিছুটা মওকুফের জন্য লিখিত আবেদন করতে বাধ্য করছেন। তাতে শিক্ষার্থীদের দোষ স্বীকার করে নিতে হচ্ছে।

অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘হিসাবরক্ষক বা কলেজের কতিপয় শিক্ষকের সঙ্গে যোগসাজশে কিছু শিক্ষার্থী পুরো টাকা পরিশোধের ছাড়পত্র পেয়েছে। তবে আমার খাতায় সব টাকা ওঠেনি।’

এ বিষয়ে কলেজের বিভিন্ন বর্ষের অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছে। পরবর্তী সময় কলেজে সমস্যা হতে পারে, এমন আশঙ্কায় তাঁদের কেউই নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।

২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী  বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে তাঁর অষ্টম সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। সম্প্রতি সনদ ও অন্যান্য কাগজ আনতে গেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ৭ হাজার ৫৩০ টাকা বাকি রয়েছে। ওই টাকা পরিশোধ করা না হলে কলেজ থেকে কোনো কাগজই দেওয়া হবে না।

২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, হিসাব অনুযায়ী কলেজে তাঁর বাকি আছে ৬০০০ টাকা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ দাবি করছে ৪৭ হাজার ৭৫০ টাকা।

গত ২৭ জুলাই এমনই ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সেজে খানজাহান আলী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়ে যান এই দুই প্রতিবেদক। কলেজের নিচতলায় হিসাব শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই শিক্ষার্থীর সব পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে। তারপরও কেন বেশি টাকা দাবি করা হচ্ছে? এ বিষয়ে আবদুর রহমান নামের একজন হিসাবরক্ষক বিস্তারিত জানতে নিরীক্ষা শাখায় যেতে বলেন।

সম্প্রতি চালু হওয়া নিরীক্ষা শাখার প্রধান হিসেবে আছেন অধ্যক্ষের শ্যালক মো. নাজমুল হাসান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, কলেজের হিসাব শাখায় শিক্ষার্থীদের বেতন হিসাবের একটি খাতা আছে। অধ্যক্ষের কাছেও আছে এ-সংক্রান্ত আরেকটি খাতা। হিসাব শাখায় কেউ টাকা জমা দিলে তা অধ্যক্ষের খাতায়ও ওঠার কথা। কিছু শিক্ষার্থীর জমা দেওয়া টাকা অধ্যক্ষের খাতায় ওঠেনি। ফলে হিসাবে গরমিল দেখা দিয়েছে।

নিরীক্ষা অনুযায়ী ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর বেতন হিসাবে দেখা যায়, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ১১ বারে তিনি ৯২ হাজার ২৫ টাকা জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে অধ্যক্ষের খাতায় ৭ বারে জমা হয়েছে ৫৬ হাজার ৮৭৫ টাকা। গরমিল ৩৫ হাজার ১৫০ টাকা। গরমিলের কারণ, চূড়ান্ত খাতায় হিসাবনেই। আবার হিসাব থাকলেও নাম ও রোল ভিন্ন দেখানো হয়েছে।

এ বিষয়ে নিরীক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, যাঁরা টাকা জমা দিতে দুর্নীতি করেছেন, তাঁদের কোনো রসিদ নেই। তবে রসিদ দেখালে তিনি বলেন, এই টাকা বকেয়া থেকে বাদ যাবে।

অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, কলেজে অব্যবস্থাপনা নেই। তবে চুরি হয়েছে। কিছু শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও হিসাবরক্ষক—এই তিন শ্রেণি মিলে আড়াই বছর ধরে এটি করেছে, না হলে তো এমনটা ঘটে না। হিসাবরক্ষক তো পরিশোধ বলে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন, তাহলে শিক্ষার্থীরা কেন এর দায় নেবেন? এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘টাকা তো আর আমার খাতায় ওঠেনি। টাকা দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করবে ওই ছাত্র আর যে এর সঙ্গে জড়িত সে। তা ছাড়া শিক্ষার্থীদের অনেকেই তো অনিয়ম হয়েছে বলে লিখিত দিচ্ছে।’

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035789012908936