খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার শ্রীফলতলা ইউনিয়নের মুহাম্মাদিয়া হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার এক শিক্ষক শিশুছাত্রকে বেধড়ক মারপিট করে গুরুতর জখম করেছে। নির্যাতনে আহত ওই শিক্ষার্থীর শরীর ফুলে উঠেছে বলে চিকিৎসক ও পরিবার সূত্র নিশ্চিত করেছেন। তবে দ্রুত সাব্বিরের কিডনি পরীক্ষার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মাতা লিপিজা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। রূপসা থানা পুলিশ সেই অভিযোগটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করেন। মাদরাসা পরিচালনা পরিষদ ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থী রূপসার ঘাটভোগ ইউনিয়নের আনন্দনগর মেঝোঝিলার মো. রইজ শেখের ছেলে সাব্বির শেখ (১১)। সে শ্রীফলতলা গ্রামের মোহাম্মাদিয়া হাফেজিয়া মাদরাসায় গত ৩ বছর যাবৎ হেফজ শাখায় লেখাপড়া করে।
সাব্বিরের চাচা শেখ অসিকুর রহমান জানান, পড়া না করে দুষ্টুমির অভিযোগ এনে নির্মমভাবে আমার ভাইপোকে বেত্রাঘাত করা হয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টা সে অজ্ঞান ছিল। শরীরের পিঠে ও হাতের বাহুতে মোট ৪০টি বেত্রাঘাত রয়েছে। প্রতিটি আঘাতের স্থানে রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। দ্রুত অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি। মামলার বাদী ওই শিক্ষার্থীর মা লিপি বেগম জানান, আমার ছেলেকে নির্মমভাবে মারপিট করে আহত করে অভিযুক্ত শিক্ষক এবং বিষয়টি গোপন রাখতে একটি কক্ষে সাব্বিরকে আটকে রেখে ভীতি প্রদর্শন করে।
পরবর্তীতে ২৩শে জানুয়ারি ঘুমানোর সময় সাব্বির রহমান মাদরাসা ছেড়ে পালিয়ে বাড়িতে এসে পরিবারের সহায়তায় রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। তার পুরো শরীর ফুলে উঠেছে। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। কিডনি পরীক্ষার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন। তার সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য আমরা চিন্তিত। এভাবে শারীরিক নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। তিন সন্তানের মধ্যে সব থেকে ছোট সাব্বির। নির্যাতনের ঘটনায় গত ২৪শে জানুয়ারি মা বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। রূপসা থানা পুলিশ সেই অভিযোগ এজাহার হিসেবে রেকর্ড করেন (নং-১৮)। দণ্ডবিধির ৩৪২, ৩২৩, ৫০৬ ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এদিকে, ঘটনার পর শিক্ষক হাফেজ মেহেদী হাসান আত্মগোপন করেছেন। এ ব্যাপারে মাদরাসার সুপার হাফেজ আবু বকর সিদ্দিকের কাছে জানতে চাইলে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি জানাজানি হলে মাদরাসা পরিচালনা পরিষদ উক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে।