রাজশাহীতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) আঞ্চলিক কার্যালয়ের কলেজ শাখার উপপরিচালক (ডিডি) ড. আলমগীর কবিরের টেবিলে এমপিওভুক্তির ১৫১টি ফাইল পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ ছাড়া তিনি কোনো ফাইল অনুমোদন করেন না।
এর আগে দুদকের কাছে অভিযোগ আসে, রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি ও এরিয়া বিল অনুমোদনের ফাইলগুলো যথাসময়ে ঢাকায় পাঠানো হয়নি।
মঙ্গলবার এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল অভিযান চালায়।
জানা গেছে, গত ১০ মার্চ দুদকের হটলাইনে অভিযোগ আসে যে, ডিডি আলমগীর কবির এমপিওভুক্তি ও বদলির ক্ষেত্রে ঘুষ নেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অনুমোদনেও অনিয়ম করেন। অভিযোগে বলা হয়, তিনি মোট ১৮৩টি ফাইল আটকে রেখেছেন।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালায়। তারা গিয়ে দেখতে পান, আলমগীর কবিরের টেবিলে ১৫১টি ফাইল জমা রয়েছে, যা সময়মতো অনুমোদন করা হয়নি।
দুদক টিমের সামনে আলমগীর কবির দাবি করেন, অসুস্থতার কারণে এবং তিন দিন সার্ভার ডাউন থাকায় তিনি ফাইল ছাড়তে পারেননি। দুদক তার কাছ থেকে লিখিত ব্যাখ্যা চায়, যার জবাব দিতে তিনি আগামী রোববার পর্যন্ত সময় নিয়েছেন।
মাউশি অধিদপ্তরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক মোহা. আছাদুজ্জামান জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফাইল ছাড়ার নিয়ম থাকলেও উপপরিচালক আলমগীর কবির তা করেননি। তার কাছে ২৮২টি ফাইল থাকলেও ১৭৪টি আটকে রেখেছিলেন। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি মাত্র ২৩টি ফাইল পাঠান, যা এখন ঢাকায় পাঠানো সম্ভব নয়।
আলমগীর কবির ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে উপপরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। তখন তার বিরুদ্ধে অনিয়মের মাধ্যমে এমপিও অনুমোদনের অভিযোগ ওঠে, যার ফলে তাকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বদলি করা হয়েছিল। পরে রাজনৈতিক সুপারিশের মাধ্যমে তিনি আবারও রাজশাহীতে ফেরার চেষ্টা চালান এবং ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে পুনরায় পদায়িত হন।
গত ডিসেম্বরে পবা উপজেলার ডাঙ্গেরহাট মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আসলাম আলী অভিযোগ করেন, তার কলেজের ৪৩ জন শিক্ষক-কর্মচারীর ৯০ লাখ টাকার এরিয়া বিল অনুমোদন আটকে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে তাকে ফোন করে ঘুষ দাবি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
দুদকের উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, আমরা পেয়েছি, ১৫১টি ফাইল আটকে আছে। অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ ছাড়া তিনি কোনো ফাইল অনুমোদন করেন না। আমরা তার লিখিত জবাব চেয়েছি এবং সেটি পর্যালোচনা করে ঢাকায় প্রতিবেদন পাঠাবো। এ বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে দুদক।