দীর্ঘ ৯ বছর পর আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এতে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় এই সমাবর্তনে ২২ গবেষককে পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টাকে ডি-লিট ডিগ্রি দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়েছেন সমাবর্তন কমিটির সদস্য সচিব ও ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. এনায়েত উল্ল্যা পাটওয়ারী।
তিনি বলেন, সমাবর্তনে ২২ হাজার ৬০০ সমাবর্তী উপস্থিত থাকবেন। এতে ১৭ জনকে এমফিল ডিগ্রি দেওয়া হবে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীদের উপাচার্যের স্বহস্তে স্বাক্ষর করা সনদ দেওয়া হবে। আমরা সমাবর্তনের কাজগুলো সর্বোচ্চ নির্ভুলভাবে করার চেষ্টা করছি।
এদিকে নিরাপত্তার কারণে ক্যাম্পাসের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ও সমাবর্তন স্থলে বেশ কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া থাকবে। তার নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বেশ সজাগ রয়েছেন।
সমাবর্তনের দিন যেসব নির্দেশনা মানতে হবে
বেলা ১টার পরে কোনো অংশগ্রহণকারীকে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এমনকি লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় ১টা বেজে গেলে বাকিরা প্রবেশ করতে পারবেন না।
বেলা ২টায় মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে। শেষ হবে বিকাল ৪টায়। এর মধ্যে অনুষ্ঠানস্থল থেকে কেউ বের হতে বা প্রবেশ করতে পারবে না। জরুরি প্রয়োজনে মেডিকেল টিম ও ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া ইমার্জেন্সি ফুড আইটেমের ব্যবস্থা রেখেছে প্রশাসন।
মোবাইল ফোন ছাড়া সঙ্গে অন্য কিছু নেওয়া যাবে না।
সকাল ৬টা থেকে শহরের নির্দিষ্ট পয়েন্ট থেকে ১০০টি বাস অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে আসবে। সমাবর্তন শেষে এগুলো শহরে ফিরে যাবে।
ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে এলে ড্রাইভার নিয়ে আসতে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ। অংশগ্রহণকারী নিজে ড্রাইভ করে এলে সমাবর্তন মিস করতে পারেন। কারণ ১ নম্বর গেটের ভেতরে কোনো ব্যক্তিগত গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হবে না।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য শহিদ মিনার, জারুল তলা, সায়েন্স ফ্যাকাল্টিসহ ৫টি পয়েন্টে এলইডি স্ক্রিনে অনুষ্ঠান দেখানো হবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি লাইভ সম্প্রচার করবে।
ক্যাম্পাসের খাবার হোটেল খোলা থাকবে। তবে ড. ইউনূস যে রাস্তা দিয়ে আসবেন, সেখানের কোনো হোটেল থাকলে সেগুলো বন্ধ রাখতে হবে।
এ ছাড়া অংশগ্রহণকারীদের প্রতি পরামর্শ দিয়ে প্রশাসন জানিয়েছে, বৃদ্ধ মা-বাবা ও দুধের শিশুদের সমাবর্তনে না আনা। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় ৩০ হাজার মানুষের মতো সমাগম হয়, এতেই রাস্তাগুলোতে কয়েক ঘণ্টার যানজট লেগে থাকে। আর এখানে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হচ্ছে। তার ওপর আবার এখন তীব্র গরম। তাই আমাদের অংশগ্রহণকারীদের বিশেষভাবে বলব, এসব দিক বিবেচনা করে আপনারা বৃদ্ধ মা-বাবা এবং ছোট শিশুদের সঙ্গে আনবেন না। তবে আমরা নিষেধ করছি না, পরামর্শ দিচ্ছি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর চারবার সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবশেষ চতুর্থ সমাবর্তন হয় ২০১৬ সালে। তাই পঞ্চম সমাবর্তন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবার মধ্যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, সমাবর্তনের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মু. জাফর উল্লাহ তালুকদার সদস্য সচিব ড. মো. শহীদুল হক, সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ শফিউর রহমান চৌধুরী।