সর্বজনীন পেনশনের ৩০ শতাংশ অর্থ এককালীন তোলা যাবে | বিবিধ নিউজ

সর্বজনীন পেনশনের ৩০ শতাংশ অর্থ এককালীন তোলা যাবে

আনুপাতিক হারে মাসিক পেনশন কমে যাবে। একই সঙ্গে কোনো গ্রাহক অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে কিস্তি পরিশোধে অক্ষম হলে ৬০ বছরের পরিবর্তে ৪০ বছর বয়স থেকেই পেনশন সুবিধা পবেন।

#পেনশন #সর্বজনীন পেনশন

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাকে আরো বেশি জনপ্রিয় ও কার্যকর করতে এটিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে পেনশনের আওতাভুক্ত একজন গ্রাহক অবসরে যাওয়ার পর গ্র্যাচুইটি হিসেবে পেনশনের ৩০ শতাংশ অর্থ এককালীন তুলে নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে আনুপাতিক হারে মাসিক পেনশন কমে যাবে। একই সঙ্গে কোনো গ্রাহক অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে কিস্তি পরিশোধে অক্ষম হলে ৬০ বছরের পরিবর্তে ৪০ বছর বয়স থেকেই পেনশন সুবিধা পবেন।

এ ছাড়া পোশাক শ্রমিক ও প্রবাসীদের বড় একটি অংশকে এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত করতে তাদের জন্য আলাদা পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। এ জন্য ‘প্রশান্তি’ নামে নতুন একটি কর্মসূচি চালুরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব সুবধা অন্তর্ভুক্ত করতে ইতোমধ্যেই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। আজ বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠেয় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। পর্ষদে তা অনুমোদিত হলে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে পেনশন কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এর আগে গত ১৪ অক্টোবর পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে বিধিমালা পরিবর্তন করে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি কী ধরনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলে এ কর্মসূচিতে মানুষ আকৃষ্ট হবে, তা প্রস্তাব আকারে প্রস্তুতের জন্য জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়।

এ বিষয়ে জানতে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা গতকাল মঙ্গলবার বলেন, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাকে আরো জনপ্রিয় করতে গ্র্যাচুইটি হিসেবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ এককালীন অর্থ ওঠানো সুবিধাসহ আরো প্রস্তাব পরিচালনা পর্ষদ সভায় উপস্থাপন করা হবে। সভায় অনুমোদন হলে বিষয়গুলো পরবর্তী সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।

এককালীন অর্থ তুলে নিলে মাসিক পেনশনের পরিমাণ কমে যাবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি ঐচ্ছিক থাকবে। কেউ তুলে নিতে চাইলে নিতে পারবে। তখন আনুপাতিক হারে মাসিক পেনশন কমে যাবে। তবে কেউ নিতে চাইলে সে পুরো সুবিধা পাবে।

জানা গেছে, পোশাক খাতের কর্মী ও প্রবাসী বাংলাদেশি– এ দুই শ্রেণির জন্য আলাদা পেনশন সুবিধা চালু করে তাদের মধ্য থেকে এক কোটি গ্রাহক করতে চায় কর্তৃপক্ষ। তাই এ জন্য আলাদা কিছু সুবিধার কথাও ভাবা হচ্ছে। যেমন– কোনো কারণে তারা চাঁদা দিতে না পারলে যাতে কোনো বীমা কোম্পানি এই চাঁদা পরিশোধ করে, সেই ব্যবস্থা রাখার কথা ভাবছে পেনশন কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি তাদের জন্য ৪০ বছর বয়স থেকেই পেনশন চালুর কথাও ভাবা হচ্ছে। এ ছাড়া সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় স্বাস্থ্য বীমার সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিও বিবেচনায় আছে।

২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। সেদিন থেকেই বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য ‘সুরক্ষা’, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘প্রবাসী’ ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ‘সমতা’– এ চার স্কিম সবার জন্য উন্মুক্ত। তবে পুরোপুরি প্রস্তুতি না নিয়েই গত নির্বাচনের আগে জনগণকে তুষ্ট করতে তড়িঘড়ি করে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালুর অভিযোগ ওঠে। চাঁদা ও পেনশন সুবিধার কাঠামোও সমালোচনার মুখে পড়ে। এতে শুরুর দিকে নিবন্ধনকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকলেও পরবর্তী সময়ে তাতে ভাটা পড়ে।

#পেনশন #সর্বজনীন পেনশন