টঙ্গীর তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার ক্যাম্পাস। ছবি : সংগৃহীত
গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসায় সহপাঠীকে মারধরের অভিযোগে নবম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখার ৫ ছাত্রকে প্রতিষ্ঠান থেকে টিসি (প্রত্যাহারপত্র) দেয়া হয়েছে।
সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় মাদরাসার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে অধ্যক্ষ ড. হিফজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
টিসিপ্রাপ্তরা শিক্ষার্থীরা হলেন- মাজহারুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ বিন ফয়সাল, জুবায়ের বিন আলতাফ, মাহির খান ও নাসিমুল হাসান রোহান। সকলেই দাখিল নবম শ্রেণির ছাত্র।
জানা গেছে, গত ২৫ মে ক্লাস চলাকালীন ঘুমিয়ে পড়া ছাত্র মাজহারুল ইসলামকে তার অপর সহপাঠী সিফাত ডিস্টার্ব করলে মাজহারুল ক্ষিপ্ত হন। ক্লাস বিরতির সময় তিনি ও তার কয়েকজন সহপাঠী মিলে সিফাতকে মারধরের চেষ্টা করেন। এ সময় সিফাতের পক্ষে থেকে ইফতেখার ইসলাম মারধরে বাধা দিলে তাকেও পরবর্তীতে টার্গেট করা হয়।
খোঁজ নিয়ে করে জানা গেছে, ক্লাস শেষে বিকেলে মাজহারুল ও তার সহযোগীরা সিফাতকে বালাদিল আমিন মসজিদের সামনে থেকে ধরে নিয়ে সিএনজি পাম্পের পাশে একটি মাঠে মারধর করেন। একই জায়গায় ইফতেখারকেও হোস্টেল থেকে তুলে এনে দ্বিতীয় দফায় মারধর করা হয়। আহত ইফতেখার পরে টঙ্গী মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ঘটনাটি মাদরাসা প্রশাসনকে জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি অনেক আগে হয়েছে, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে। আমার অভিভাবক মাদরাসায় গিয়েছিলেন ঈদের আগে। আমি ২৮ জুন শুরু হওয়া পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩টি পরীক্ষাও দিয়েছি। কিন্তু হঠাৎ করে আজ জানানো হলো আমাদের ৫ জনকে টিসি দেওয়া হয়েছে।
আরেক অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ বিন ফয়সাল জানান, তিনি মারামারিতে অংশ নেননি, তবে মাঠে উপস্থিত ছিলেন বলে তাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর মা মইরম আক্তার মিনা বলেন, ‘এটা তদন্ত না, সরাসরি একটি শিক্ষার্থীকে তার ভবিষ্যৎ থেকে বঞ্চিত করার মতো অন্যায়। আমার ছেলে পরীক্ষাও দিয়েছে, হঠাৎ করে আজকে টিসি দেওয়া হলো। টিসি কি সমাধান? তারা অভিযোগের প্রমাণ আমাদেরকে দেননি।’
টিসিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী জুবায়ের বিন আলতাফ জানান, আমি দূর থেকে মারামারি দেখেছি, কিন্তু কাউকে মারিনি। তার মা দাবি করেন, ঈদের ছুটির আগে শিক্ষক গোলাম মোস্তফা মাদরাসায় যেতে বলেন, পরে জানানো হয় তার ছেলে মারামারির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু ঈদের পর আবার ক্লাসে অংশ নিতে বলা হয় এবং পরীক্ষায়ও অংশ নেয় সে। ‘এখন হঠাৎ করে টিসির নোটিশ—বিষয়টি আমাদের জন্য বিস্ময়কর,’ বলেন তিনি।
তবে টিসিপ্রাপ্ত মাহির খান ও নাসিমুল হাসান রোহানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (জিএস) সাইদুল ইসলাম জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অনিয়মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. হিফজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করলেও টিসির বিষয়ে প্রশ্ন করাই সংযোগ কেটে দেন।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।