জনপ্রশাসন সংস্কারে পক্ষপাতের অভিযোগ, ৬ দাবি আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের | বিবিধ নিউজ

জনপ্রশাসন সংস্কারে পক্ষপাতের অভিযোগ, ৬ দাবি আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের

`স্বাধীনতার পর ২৬টি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠিত হলেও কার্যকর পরিবর্তন আসেনি। এবারের কমিশনের প্রতিও আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু এখানেও একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রয়াস দেখা যাচ্ছে।'

#আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের #জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

‘জনপ্রশাসন সংস্কার: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ সেমিনারে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের নেতারা। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইইবি) মিলনায়তনে আয়োজিত এ সেমিনারে বক্তারা বলেন, এই সংস্কার কমিশনও পূর্ববর্তী কমিশনের মতো পক্ষপাতদুষ্ট ও বৈষম্যমূলক অবস্থান গ্রহণ করেছে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার পর ২৬টি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠিত হলেও কার্যকর পরিবর্তন আসেনি। এবারের কমিশনের প্রতিও আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু এখানেও একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রয়াস দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়িত হলে রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে এবং প্রশাসনিক ফ্যাসিজম আরো শক্তিশালী হবে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, প্রশাসন ক্যাডারের একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখতে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, জেলা পরিষদ বিলুপ্তির প্রস্তাব, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, পরিসংখ্যানসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্যাডারগুলোর বিষয়ে জটিলতা তৈরি করা হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট এম. এ. আজিজ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক আহমেদ ইকবাল চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক ফিরোজ আহমেদ, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ড. শাহজাহান সাজু, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব (শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক) ফয়সাল মাহমুদ শান্ত ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার খান মঞ্জুর মোরশেদ আলোচনায় অংশ নেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ও আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক মো. জামিলুর রহমান।

পরিষদের প্রস্তাবিত দাবিগুলো: কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় (যার ক্যাডার, তার মন্ত্রণালয়) বাস্তবায়ন, উপসচিব পদে কোটা বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগ, সব ক্যাডারের সমান মর্যাদা ও সুযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, পরিসংখ্যান ক্যাডারকে একই কমিশনের আওতায় রাখা, সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিসে প্রশাসন ক্যাডারকে ফেরার বিশেষ সুযোগ বাতিল, ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ শব্দের পরিবর্তে ‘ভূমি সার্ভিস’ বা ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা সার্ভিস’ নামকরণ।

বক্তারা আরো বলেন, একই দেশে একটি ক্যাডার পদ না থাকা সত্ত্বেও প্রমোশন পায়, অন্য ক্যাডার পদ থাকা সত্ত্বেও বঞ্চিত হয়—এটা কোন সভ্য প্রশাসন হতে পারে না। এটি ক্ষমতাকেন্দ্রিক অব্যবস্থা ও উপনিবেশিক মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ।

তারা জোর দিয়ে বলেন, সার্ভিসে পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে এবং জনগণের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে হলে সমতা ও দক্ষতা-ভিত্তিক পদায়ন ও পদোন্নতি অপরিহার্য।

বক্তারা আরো বলেন, বিরাজমান প্রশাসনিক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে ২৫টি ক্যাডারের প্রায় সব শীর্ষ পদে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন নেই। এতে, সংশ্লিষ্ট ক্যাডার কর্মকর্তারা কাজের স্পৃহা হারিয়ে ফেলছেন। ফলে জনগণ তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা বলেন, দক্ষ, পেশাদার ও গতিশীল সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যথাসময়ে পদোন্নতিসহ সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা নিশ্চিত করতে হবে। একই দেশে একটি ক্যাডারের কর্মকর্তা পদ না থাকা সত্ত্বেও প্রমোশন পাবে, আর অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদ থাকা সত্ত্বেও প্রমোশন পাবে না - এটা কোন সভ্য প্রশাসন ব্যবস্থা হতে পারে না। ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকায় এটা প্রশাসন ক্যাডারের ইচ্ছা করে তৈরি করা জটিলতা ও উপনিবেশিক মনোভাব বলে মনে করেন বক্তারা। সেজন্য এ অনিয়ম দূর করতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের #জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন