জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের প্রথম ধাপের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর বিভিন্ন বিভাগে মোট ৭৭৩টি আসন শূন্য রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার অফিসের এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মঙ্গলবার এই তথ্য জানানো হয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ক ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আসন ফাঁকা থাকার এই পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, মোট সাতটি ইউনিটের অধীনে এই বিপুল সংখ্যক আসন এখনও পূরণ করা যায়নি।
এর মধ্যে ছাত্র এবং ছাত্রীদের জন্য আলাদাভাবে ফাঁকা আসনের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ছেলেদের জন্য ৩৯৯টি এবং মেয়েদের জন্য ২৭৪টি আসন এখনও খালি রয়েছে।
ইউনিটভিত্তিক আসন ফাঁকা থাকার চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আসন ফাঁকা রয়েছে ‘এ’ ইউনিটে। এই ইউনিটে বিজ্ঞান অনুষদ এবং জীববিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিভাগ অন্তর্ভুক্ত। ‘এ’ ইউনিটে ছেলেদের জন্য ৯৮টি এবং মেয়েদের জন্য ৮৫টি আসন খালি পড়ে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে, আসন ফাঁকা থাকার পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে।
প্রথমত, অনেক শিক্ষার্থী একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় তাদের পছন্দের তালিকায় থাকা প্রথম দিকের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হয়েছেন। ফলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও অনেকে ভর্তি হননি।
দ্বিতীয়ত, কিছু শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট বিষয়ে ভর্তির আগ্রহ না থাকায় তাদের বরাদ্দকৃত আসন ছেড়ে দিয়েছেন।
তৃতীয়ত, মেধাতালিকার একেবারে শেষ দিকের কিছু শিক্ষার্থী হয়তো ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেননি।
এই বিপুল সংখ্যক আসন ফাঁকা থাকার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
আসনগুলো পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ধাপের ভর্তি প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার পরিকল্পনা করছে। সাধারণত, প্রথম ধাপের ভর্তি শেষে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থীদের ডাকা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলেই আশা করা যাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট (ju-admission.org) এ ভর্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। আগ্রহী এবং অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের নিয়মিতভাবে এই ওয়েবসাইটটি অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ওয়েবসাইটে পরবর্তী ধাপের ভর্তি প্রক্রিয়া, সময়সূচী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ প্রকাশ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, খুব শীঘ্রই অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য ডাকা হবে। তবে, কোন ইউনিটে কতজন শিক্ষার্থীকে ডাকা হবে এবং ভর্তির শেষ তারিখ কবে, তা পরবর্তীতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে জানানো হবে।
এই আসন ফাঁকা থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষার্থী সংকট দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যেসকল বিভাগে তুলনামূলকভাবে বেশি আসন খালি রয়েছে, সেসব বিভাগে পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
তবে, আসন ফাঁকা থাকার একটি ইতিবাচক দিকও রয়েছে। এর ফলে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা অনেক যোগ্য শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবেন। যারা প্রথম ধাপে সুযোগ পাননি, তাদের জন্য এটি একটি নতুন আশা জাগাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশা করছে, দ্বিতীয় ধাপের ভর্তি প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে অধিকাংশ ফাঁকা আসন পূরণ করা সম্ভব হবে।
ভর্তি প্রক্রিয়া সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট এবং সংশ্লিষ্ট অফিসের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষাদান করা হয়।
মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী এখানে ভর্তির জন্য আবেদন করে থাকে।
এবছর প্রথম ধাপের ভর্তিতে কিছু জটিলতা এবং দীর্ঘসূত্রিতা দেখা গেলেও, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশা করছে পরবর্তী ধাপের প্রক্রিয়া দ্রুত এবং ত্রুটিমুক্তভাবে সম্পন্ন করা যাবে।
শিক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।