ইউরোপের ৯ দেশ সরাসরি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়ালো | বিবিধ নিউজ

ইউরোপের ৯ দেশ সরাসরি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়ালো

ইসরায়েল সরকার ঘোষণা করেছে যে, তারা অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ২২টি অবৈধ বসতি স্থাপন করবে। এর মধ্যে কিছু তথাকথিত ‘আউটপোস্ট’ রয়েছে, যেগুলো ইতোমধ্যে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই নির্মিত হয়েছে। এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

#ইসরায়েল #ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ #ইউরোপ #ফিলিস্তিন

হামাসের হামলার পর ফিলিস্তিনের গাজায় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৭ অক্টোবর থেকে নির্বিচার ও নৃশংস হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ পর্যন্ত প্রায় ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন; যাদের বেশির ভাগ শিশু ও নারী। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে যেভাবে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, এবারও ঠিক একই কায়দায় গাজা থেকে বাসিন্দাদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। দেশটি সেখানে অবৈধ বসতি সম্প্রসfরণের ঘোষণা দিয়েছে।

গত ২৯ মে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল সরকার ঘোষণা করেছে যে, তারা অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ২২টি অবৈধ বসতি স্থাপন করবে। এর মধ্যে কিছু তথাকথিত ‘আউটপোস্ট’ রয়েছে, যেগুলো ইতোমধ্যে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই নির্মিত হয়েছে। এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

ওই দিন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। কাটজ বলেন, এই পদক্ষেপ ‘জুডিয়া এবং সামারিয়ায় আমাদের নিয়ন্ত্রণকে শক্তিশালী করবে।

ইসরায়েল ইতোমধ্যে পশ্চিম তীরজুড়ে ১০০টিরও বেশি অবৈধ বসতি নির্মাণ করেছে, যেখানে প্রায় পাঁচ লাখ বসতি স্থাপনকারী বসবাস করছে। এই বসতিগুলো ছোট আউটপোস্ট থেকে শুরু করে আধুনিক অবকাঠামোসহ বড় সম্প্রদায় পর্যন্ত বিস্তৃত। পশ্চিম তীরে ৩০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি বসবাস করে, যারা ইসরায়েলি সামরিক শাসনের অধীনে জীবনযাপন করে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সীমিত এলাকায় শাসন পরিচালনা করে।

এবার এই অবৈধ বসতি স্থাপন ও অধিগ্রহণের কারণে বিপদে পড়তে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইউরোপ থেকে দেশটির ওপর এলো বড় এক ধাক্কা। ফিলিস্তিন অধিগ্রহণ করার কারণে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়াল ইউরোপের ৯ দেশ।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রয়টার্সের অনুসন্ধানে পাওয়া এক গোপন চিঠি অনুসারে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এই ৯ দেশ ইউরোপীয় কমিশনকে অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করার বিষয়ে প্রস্তাব তৈরির আহ্বান জানিয়েছে।

দেশগুলো হলো- বেলজিয়াম, ফিনল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্লোভেনিয়া, স্পেন ও সুইডেন। ইইউর পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কালাসকে পাঠানো ওই চিঠিতে সই করেছেন এসব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

রয়টার্স জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইসরায়েলের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার, যা তাদের মোট পণ্য বাণিজ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। গত বছর ব্লক এবং ইসরায়েলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক পণ্য বাণিজ্য ছিল ৪২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ইউরো (৪৮ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার); যদিও এই বাণিজ্যের কতটা অংশ অধিকৃত বসতি স্থাপনের সঙ্গে জড়িত, চিঠিতে তা স্পষ্ট করা হয়নি।

চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের একটি মতামতের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে যে ফিলিস্তিনি অঞ্চল এবং সেখানে বসতি স্থাপনে ইসরায়েলের দখল অবৈধ। আরও বলা হয়েছে যে পরিস্থিতি বজায় রাখতে সাহায্যকারী বাণিজ্য বা বিনিয়োগ সম্পর্ক রোধ করার জন্য রাষ্ট্রগুলোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা লিখেছেন, ‘অবৈধ বসতি স্থাপনের সঙ্গে পণ্য ও পরিসেবার বাণিজ্য কীভাবে কার্যকরভাবে বন্ধ করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা শুরু করার কোনো প্রস্তাব আমরা দেখিনি।’

তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত কর্তৃক চিহ্নিত বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলতে ইউনিয়নের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের জন্য ইউরোপীয় কমিশনের প্রস্তাব তৈরি করা আমাদের প্রয়োজন।

এ বিষয়ে জানাতে আল জাজিরা অনুরোধ করলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নে অবস্থিত ইসরায়েলের কূটনৈতিক মিশন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রিভোট রয়টার্সকে বলেছেন, ‘ইউরোপকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বাণিজ্য-নীতি নিশ্চিত করতে হবে। বাণিজ্য আমাদের আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি নিশ্চিত করতে হবে যে ইইউ নীতিগুলো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো অবৈধ পরিস্থিতি বা স্থায়িত্বে অবদান না রাখে।’

আগামী ২৩ জুন বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তার আগেই এই চিঠি প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইসরায়েলের সঙ্গে ব্লকের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানা গেছে।

গাজার পরিস্থিতির নিয়ে ব্লকটি চুক্তিতে ইসরায়েলের আনুগত্য পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ছাড়া ইউরোপের সঙ্গে দেশটি তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণকারী একটি চুক্তিতে মানবাধিকারের ধারা মেনে চলছে কি না, সেটার ওপর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মূল্যায়ন করবেন।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#ইসরায়েল #ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ #ইউরোপ #ফিলিস্তিন