রাবি ছাত্রদলের ক্যাডার পরিচয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাকে কলেজশিক্ষকের হুমকি | কলেজ নিউজ

রাবি ছাত্রদলের ক্যাডার পরিচয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাকে কলেজশিক্ষকের হুমকি

শিক্ষা কর্মকর্তাকে হুমকি দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই লোক আস্ত একটা বেয়াদব। এর আগে আমার সঙ্গেসহ পত্নীতলায় অনেক শিক্ষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। গত বুধবার তিনি আমার কলেজে গেছেন। সেদিন আমি অসুস্থ ছিলাম তাই কলেজে যাইনি।

#কলেজ #শিক্ষক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক ক্যাডার পরিচয় দিয়ে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক কলেজশিক্ষকের বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ টি এম জিল্লুর রহমানকে ফোন করে হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

অডিওতে নজরুল ইসলাম বাচ্চু নামে ওই কলেজশিক্ষক পত্নীতলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমানকে হুমকি দিতে শোনা যায়। এক মিনিট ১৩ সেকেন্ডের ওই অডিওতে নানাভাবে শিক্ষা কর্মকর্তাকে হুমকি দেন ওই শিক্ষক।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে হুমকি দিয়ে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনার ভাগ্য ভালো। আমার কলেজে এসেছেন আমার খোঁজ করেছেন হুমকি দিয়ে গিয়েছেন। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডার। আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের ক্যাডার। আমার নাম নজরুল ইসলাম বাচ্চু। আমি কিন্তু রাজপথের লড়াকু সৈনিক। এরশাদ আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকার একজন। মানে সেই রকম ক্যাডার ছিলাম আমি। আপনি জানেন তারেক রহমানের সঙ্গে আমার কি সম্পর্ক। কথাবার্তার একটা পর্যায়ে শিক্ষা অফিসে আসারও হুমকি দেন কলেজশিক্ষক নজরুল ইসলাম বাচ্চু।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নজরুল ইসলাম বাচ্চু চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রায় তিন মাস আগে ওই কলেজের প্রিন্সিপাল দীপক কুমারের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা অনিয়মের একটি অভিযোগ যায় উপজেলা প্রশাসনের কাছে।

অভিযোগ তদন্তে গঠন করা হয় ৩ সদস্যের কমিটি। যেখানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সমাজসেবা কর্মকর্তা ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়। কিন্তু সেই অভিযোগের এখনও তদন্ত শুরু হয়নি। এতেই ক্ষোভ জন্ম নেয় নজরুল ইসলাম বাচ্চুর মনে। সেই থেকেই তাদের মনোমালিন্য শুরু হয়।

অডিওর সত্যতা জানতে যোগাযোগ করা হলে পত্নীতলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ টি এম জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ডিরেক্টর মহোদয়ের নির্দেশে গত ২৯ জানুয়ারি (বুধবার) চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র ডিগ্রি কলেজে আমি ল্যাব দেখতে গিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে শুনি, ওই ল্যাব তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছেন ওই কলেজের শিক্ষক নজরুল ইসলাম বাচ্চু। উনি সেদিন কলেজে ছিলেন না। তারপরে ল্যাবের রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘রোববার ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বাচ্চু আমাকে ফোন করে হুমকি দেন। এর আগেও একবার তিনি আমাকে হুমকি দিয়েছেন। আজকে ফোন দিয়ে আমাকে হুমকি দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। এই শেষ বয়সে এসে আমাকে এইভাবে কেউ অপমান করলো এটা দুঃখজনক। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এখনও জানাইনি। তবে জানাবো।’

শিক্ষা কর্মকর্তাকে হুমকি দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই লোক আস্ত একটা বেয়াদব। এর আগে আমার সঙ্গেসহ পত্নীতলায় অনেক শিক্ষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। গত বুধবার তিনি আমার কলেজে গেছেন। সেদিন আমি অসুস্থ ছিলাম তাই কলেজে যাইনি। আমার সহকর্মীদের তিনি বলেছেন, বাচ্চু কোথায় আমি তার চেহারাটা দেখতাম, আমি বগুড়ার ছেলে। রোববার আমি কলেজে গিয়ে এসব শুনে আমার মাথাটা গরম হয়ে গেলো। তারপর ফোন দিয়ে আমিও তাকে উল্টাপাল্টা কথা বলেছি।’

এ বিষয়ে চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শুনীল চন্দ্র বলেন, যেদিন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আসেন সেদিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরীক্ষা ছিল আমার সঙ্গে টিম ছিল। আমি ওদিকে ব্যস্ত ছিলাম। আমি কিছু জানি না, কল রেকর্ডও আমি শুনিনি। তাদের দুজনের কে কাকে কি বলেছেন জানি না।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আলিমুজ্জামান মিলন বলেন, ‘বিষয়টি স্যোশার মিডিয়ায় জানার পর আমি নিজেই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফোন দিয়েছিলাম। অফিসে উনার সঙ্গে এখনও দেখা হয়নি। উনি বলেছেন, সাক্ষাতে উনি বিষয়টি আমাকে বলবেন। উনার কাছ থেকে ডিটেইলস শোনার পর এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে।

#কলেজ #শিক্ষক