মিরপুরের শাহ আলী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা | কলেজ নিউজ

মিরপুরের শাহ আলী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রাজধানীর মিরপুরের হযরত শাহ আলী মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিন মুরাদের বিরদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে।

#কলেজ #শিক্ষক #দুদক #অধ্যক্ষ #শিক্ষার্থী

রাজধানীর মিরপুরের হযরত শাহ আলী মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিন মুরাদের বিরদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে।

২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে হযরত শাহ আলী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কলেজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। কমিশন অভিযোগটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়। তিনি অনুসন্ধান শেষে চলতি বছরের মার্চ মাসে মামলার সুপারিশসহ কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করেন। কমিশন প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে মামলা করার অনুমোদন দেয়। এরপরই সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে দুদকের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন।

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, ময়েজ উদ্দিন মুরাদ ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ৮ সেপ্টেম্বর হযরত শাহ আলী মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। তার দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে কলেজের উন্নয়নে ‘কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি)’ গ্রহণ করে। প্রকল্পের আওতায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্পের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পান অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিন। তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রণী ব্যাংক মিরপুর শাখায় হযরত শাহ আলী মহিলা কলেজের নামে একটি ব্যাংক হিসাব খোলেন এবং ব্যাংক হিসাবে তার একক নিয়ন্ত্রণ ছিল। নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পের প্যাকেজ-১-এর আওতায় নির্মাণকাজের মেজারমেন্ট বুকসহ সংশ্লিষ্ট কাজের প্রত্যায়নপত্রে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী (ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং শাখা) মিজানুর রহমানের সিলমোহর ও স্বাক্ষর থাকা বাধ্যতামূলক। অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিন প্রকৌশলীর নামে জাল সিলমোহর তৈরি করে ও স্বাক্ষর জাল করে নির্মাণকাজের নামে ৩৪ লাখ ২৬ হাজার ৫৬৫ টাকা আত্মসাৎ করেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ময়েজ উদ্দিন অধ্যক্ষ হিসেবে কলেজ তহবিল থেকে ৫৫ হাজার স্কেলে বেতন-ভাতা গ্রহণ করেন। তিনি আর্থিক বিধি পাশ কাটিয়ে বেতন-ভাতার নামে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর থেকে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি পর্যন্ত ৫১ মাস ৬ হাজার ২৫০ টাকা করে ৩ লাখ ১৮ হাজার ৭৫০ টাকা বেশি নিয়েছেন। তিনি মালামাল না কিনেই ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২০ মে ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে ৬২ হাজার ৫৬০ টাকা আত্মসাৎ করেন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় পণ্য কেনা দেখিয়ে ২১ হাজার ১৩০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০২০ অর্থবছরে ব্যয় দেখিয়ে ব্যাংক থেকে ২ কোটি ৭৮ লাখ ৬৪০ টাকা তোলেন। কিন্তু কলেজের ক্যাশবুকে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৬৭ লাখ ৬ হাজার ২০ টাকা। অতিরিক্ত টাকা তিনি আত্মসাৎ করেন। দোকানের ভাড়া আদায় করে ব্যাংকে জমা না দিয়ে দীর্ঘদিন নিজের কাজে রেখে দেন।

অর্থ নয়-ছয়ের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গভর্নিং বডির সদস্য টিপু সুলতানকে দিয়ে কলেজের ফান্ডে টাকা জমা দিয়ে ভাউচার সংগ্রহ করেন অধ্যক্ষ। কলেজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩ ফেব্রুয়ারি তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। এরপরই অনুসন্ধানে নামে দুদক। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ৪৯ লাখ ২৯ হাজার ৪২৫ টাকা আত্মসাতের তথ্য-প্রমাণ পেয়ে মামলা করে দুদক। মামলার তদন্তকালে আরও কী পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে তা জানার চেষ্টা করা হবে এবং অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে কারা জড়িত ছিলেন তা খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

#কলেজ #শিক্ষক #দুদক #অধ্যক্ষ #শিক্ষার্থী